বাংলার ভোর প্রতিবেদক:
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ‘জরুরি অবস্থা’ এবং সাধারণ ছুটির কারণে শুক্রবার থেকে সারা দেশে টিসিবির পণ্য সরবরাহ বন্ধ রেখেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এছাড়া বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ রয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিচালিত ওএমএসের পণ্য বিক্রি কার্যক্রমও।
স্বল্পমূল্যে বিক্রি হওয়া এসব পণ্য নিম্ন আয়ের মানুষের প্রধান ভরসা। পণ্য বিক্রির এ কার্যক্রম কবে নাগাদ চালু করা সম্ভব হবে, সেটি সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি যশোরের এই দুই সংস্থা ডিলাররা। এ বিষয়ে যশোরের ওএমএস এর এক ডিলার লাইজু জামান জানান, ‘গত বৃহস্পতিবার থেকেই পণ্য বিক্রি সম্ভব হচ্ছে না।
শহরের চারখাম্বা মোড়ের ওএমএস ডিলার ফিরোজ উদ্দীন তোতা জানান, গত বৃহস্পতিবার চলতি সপ্তাহের চাল ও আটা খাদ্য গুদাম থেকে তুললেও তা বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। আগামী রোববার থেকে হয়তো বিক্রি করা সম্ভব হবে। তবে প্রতিদিনই দোকানের সামনে শত শত ক্রেতা ভিড় করছেন চাল-আটার জন্য সকাল থেকে। বুধবার সকালেও দোকানে ভিড় ছিল। পরে ক্রেতাদেরকে রোববার থেকে মালামাল বিক্রি হবে বলে জানালে তারা ফিরে যান।
চলতি মাসেও নিম্ন আয়ের মানুষেরা দুই কেজি ডাল, দুই লিটার সয়াবিন তেল ও পাঁচ কেজি চাল ৪৭০ টাকায় ক্রয় করছিল টিসিবি থেকে। সেখানে ডালের মূল্য ধরা হয়েছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, তেল লিটারপ্রতি ১০০ টাকা ও চাল কেজিপ্রতি ৩০ টাকা দরে। অন্যদিকে ওএমএসের মাধ্যমে আটা প্রতি কেজি ২৪ টাকা এবং চাল প্রতি কেজি ৩০ টাকায় কিনেছে নিম্ন আয়ের মানুষেরা। বর্তমান ওএমএস ও টিসিবির পণ্য বিক্রি বন্ধ থাকায় বাজার থেকে এসব পণ্য দ্বিগুণের বেশি মূল্যে কিনতে হচ্ছে।
যশোর শহর লালদীঘির পারে চোখে পরে অলস সময় পার করছে দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের বিভিন্ন পেশার মানুষেরা। পেটের দায়ে বাইরে বের হলেও কাজ জুটছে না কারো কপালে। শহরের শংকরপুর এলাকার বাসিন্দা দিনমজুর মোহাম্মদ আলী বলেন, সংসারে আমরা চারজন সদস্য প্রতিদিন যা আয় করি তা দিয়ে কোন রকম সংসার চলে। গত কয়েকদিন ধরে কোন কাজ নাই। ধার করে সংসার চালাতে হচ্ছে। আর কতো ধার দেনা করবো, বা এতো ধারই বা কে দেবে আমাদের। অল্প দামে ওএমএস থেকে চাল-আটা কিনতে পারতাম, সেটাও কয়েকদিন ধরে কিনতে পারছিনা। ঘরে খাবার শেষ, বাজারে যেতেও ভয় পাচ্ছি পণ্যের যে দাম। আমার মতো এখানে যারা আছে সবারই একই অবস্থা।’