সাতক্ষীরা সংবাদদাতা
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, দেশের জনগণ ১৫ টি বছর ধরে হত্যা, খুন, গুমসহ চরম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আহত হয়েছেন, চোখ হারিয়েছেন, পা হারিয়েছেন, পঙ্গু হয়েছেন, ব্যবসা হারিয়েছেন, সম্পদ হারিয়েছেন। আমরা যেটি দীর্ঘদিন যাবৎ করতে পারিনি ছাত্র আন্দোলন এক মাসেই তা করে দেখিয়েছে। তাই নির্বাচন নিয়ে কোন ব্যস্ততা নয়। দেশি-বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বর্তমান সরকার সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। তাদেরকে সহযোগিতা করা আমারে প্রত্যেকের নৈতিক দায়িত্ব।
শনিবার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শাহাদাতবরণকারী চার শহীদ পরিবারের সম্মানে আয়োজিত দোয়া ও নগদ অর্থ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমীর মুহাদ্দিস রবিউর বাশারের সভাপতিত্বে এবং জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ও মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী। এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, সাবেক এমপি গাজী নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল বারী, শহর ছাত্রশিবিরের সভাপতি আল মামুন, জেলা শিবিরের সভাপতি ইমামুল ইসলাম, শহর জামায়াতের আমীর জাহিদুল ইসলাম, সদর উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা শাহাদাৎ ণ্ডসাইন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমস্বয়ক রিফাত হোসেন, নাজমুল ইসলাম রনি, নাহিদ হাসান এবং ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আসিফ ণ্ডসাইনের পিতা মাহবুবুল আলম। অনুষ্ঠানে শহীদ আলম সরদার, হাফেজ আনাছ বিল্লাহ এবং আদম আলীর পরিবার উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা নায়েবে আমীর শেখ নুরুল ণ্ডদা, আব্দুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মাহবুবুল আলম, অধ্যাপক গাজী সুজায়াত আলী, প্রভাষক ওমর ফারুক, কর্মপরিষদ সদস্য জামশেদ আলম, রুণ্ডল আমিন, এড. আব্দুস সুবহান মুকুল, মাওলানা ওসমান গণি, সমন্বয়ক সুহাইল মাহদীন সাদি, সদর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মোশাররফ ণ্ডসাইন, শহর জামায়াতের সেক্রেটারি খোরশেদ আলম, কলারোয়া উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা কামরুজ্জামান, আশাশুনি উপজেলা জামায়াতের তারিকুজ্জামান তুষার, সেক্রেটারি মাওলানা মোশাররফ ণ্ডসাইন, দেবহাটা উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা ওলিউল ইসলাম, সেক্রেটারি হাফেজ এমদাদুল হক, কালিগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে আমীর মাওলানা আব্দুল ওহাব সিদ্দিকী, শ্যামনগর উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আব্দুর রহমান, সেক্রেটারি মাওলানা গোলাম মোস্তফা, শহর নায়েবে আমীর মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি হাবিবুর রহমান, এড. আবু তালেব, মাস্টার বদিউজ্জামান, আনিছুর রহমান প্রমুখ।
মিয়া গোলাম পরওয়ার সাতক্ষীরার গণমানুষের ত্যাগের কথা স্বীকার করে বলেন ১৫ বছরের আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র শিবিরের প্রায় অর্ধশতাধিক ভাইকে শহীদ করা হয়েছে, আহত করা হয়েছে দেড় শতাধিক। ২৫৬ টি বাড়ি ঘরে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট করে ছাত্রলীগ যুবলীগের সন্ত্রাসীরা।
সাতক্ষীরা জামায়তে ইসলামীর প্রাণপুরুষ কাজী শামসুর রহমান সাহেবের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন তার অবদানে আজকের এই জামায়াতে ইসলামের বর্তমান অবস্থা। সাবেক এমপি আব্দুল খালেক মণ্ডলের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, জেলখানায় থাকাকালিন তিনি কুরআনের হাফেজ হয়েছেন এবং সেখানেই তাকে তিলে তিলে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর এ ত্যাগ সাতক্ষীরাবাসী স্মরণ রাখবে।
পরে সেক্রেটারি জেনারেল সাতক্ষীরায় কোটা আন্দোলনে শহীদ চারজন ভাইয়ের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন। দোয়া মোনাজাতে তিনি বন্যার্তদের জন্য আল্লাহর কাছে সহযোগিতা কামনা করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক বলেন, শেখ হাসিনা পালায় না, এ কথা বলার পরদিনই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। জামাতে ইসলামী পালাই না জামাতের নেতারা হাসি মুখে ফাঁশির রশিকে চুম্বন করেছে। এদেশের জনগণ তাদেরকে আর কোন ষড়যন্ত্র করতে দেবে না।
মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী তার বক্তব্যে কুরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন স্বৈরাচার সরকার চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র করেছিলো আল্লাহ তাদের সকল চক্রান্ত ষড়যন্ত্রে তাদেরকেই গ্রাস করেছে।
কেন্দ্রয়ি কর্মপরিষদ মাওলানা আবুল কালাম আজাদ তার বক্তব্যে বলেন আল্লাহর কাছে দুটি জিনিস সবচাইতে প্রিয় শহীদের এক ফোটা রক্ত এবং মুত্তাকির এক ফোটা চোখের পানি।
অনুষ্ঠানের সভাপতি মুহাদ্দিস রবিউল বাশার বলেন, বাংলাদেশ নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে এই স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য আমরা অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করব দেশের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখব।
অনুষ্ঠানে শহর জামাতের আমির জাহিদুল ও সাধারণ সম্পাদক বৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।