বাংলার ভোর ডেস্ক
নির্বাচনের মহাসড়কে উঠতে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সংস্কার কাজগুলো দ্রুত শেষ হবে— এমনটাই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘বুধবার প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে বক্তব্য রেখেছেন এবং তিনি কিছু সংস্কারের কথা বলেছেন, সেখানে সংস্কারে যারা দায়িত্বে তাদের নামও উল্লেখ করেছেন। তিনি মোটামুটিভাবে তার যে একটা ভিশন, এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের, সেটা তিনি মোটা দাগে তুলে ধরেছেন।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষিত সংস্কার রূপরেখার বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিএনপি মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘এখানে আমি মনে করি যে, সংস্কারের কথা আমরা সবাই বলেছি, সংস্কার প্রয়োজনৃ গণতান্ত্রিক অধিকার একেবারে ধ্বংস করে ফেলেছিল। সেক্ষেত্রে অতিদ্রুত যেন এই সংস্কারের কাজগুলো শেষ করা হয়। মূল যে বিষয়টা রয়েছে গণতন্ত্রের জন্যে-জনগণের প্রতিনিধিদের শাসন, জনগণের পরিচালনায়, তাদের নির্বাচিত পার্লামেন্ট দিয়ে দেশ চলবে। সেই বিষয়টা যেন অবশ্যই খুব দ্রুততার সঙ্গে সমাপ্ত হয়, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের সাফল্য কামনা করি। আমরা মনে করি যে, অন্তবর্তীকালীন সরকার কাজ করছে। এই কাজ করার জন্য তাদেরকে সময়-সুযোগ সবই দেওয়ার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
‘আমরা আশা করি যে, তারা যথা শিগগিরই স্বল্প সময়ের মধ্যে এই কাজগুলো (সংস্কার) শেষ করে নির্বাচনের দিকে যাবেন।’
ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এসেছে। আমরা আশা করবো, তারা জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে। একটি কথা স্পষ্টভাবে বলা প্রয়োজন— গণতন্ত্রের কোনও বিকল্প নাই। গণতন্ত্র হচ্ছে একমাত্র ব্যবস্থা, যা জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারে। সেজন্যই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠাগুলোকে তৈরি করা হচ্ছে, আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কিন্তু সেই কাজটাতে জনগণের সম্পৃক্ততা থাকতে হবে। জনগণ কী চায়, জনগণ কীভাবে জিনিসটা দেখতে চায়, সেই বিষয়টা থাকতে হবে।’
‘আমরা আশা করবো, বর্তমান যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আছে, তারা সেটা উপলব্ধি করবেন। যাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া আছে, তারা দায়িত্ব অত্যন্ত সুচারুরূপে পালন করার চেষ্টা করবেন এবং জনগণ যাতে উপকৃত হয়, সেই প্রত্যাশাই আমাদের থাকবে।’
আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস পালনে বিএনপির ঘোষিত দুদিনের কর্মসূচির প্রস্তুতি পর্যালোচনা করতে দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের নিয়ে সমন্বয় সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন স্থায়ী কমিটির অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন। এই সভায় বিএনপি মহাসচিব প্রধান অতিথি ছিলেন। বৈঠকের পর সংবাদ ব্রিফিং করেন মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই রকম বিপ্লবের পরে এই ধরনের সমস্যা থাকতেই পারে। এটা তো সম্পূর্ণ নতুন গভর্নমেন্ট। প্রশাসনে এতদিন ধরে আওয়ামী লীগ যেটা করেছে, সম্পূর্ণ রাজনীতিকরণ করতে গিয়েৃ সব জায়গায় বেশিরভাগ তাদের মতালম্বী লোকদের প্রমোশন দিয়েছে, পদায়ন করেছে, তাদেরকে দিয়ে কাজ করিয়েছে।’
‘ফলে এটা একটু সময় লাগবেই। পুরোপুরিভাবে নতুন করে তো এই মুহূর্তে রিক্রুট করে, এত অফিসার নিয়োগ করা সম্ভব না। যা আছে তাদেরকে দিয়ে করতে হবে।
সেজন্য আমাদেরকে একটু ধৈর্য ধরতে হবে। আমার বিশ্বাস যে, অতি অল্প সময়ের মধ্যে সব কিছু সুষ্ঠু হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘একটা অভ্যুত্থান যখন হয়, একটা বিপ্লব যখন হয়-কুসুমাস্তীর্ণ নয়। এই সমস্যাগুলো যেগুলো আছে, সেগুলোকে পেরিয়ে কাজ করতে হয়।’
‘একটু ধৈর্য তো আমাদের ধরতেই হবে এবং মানুষকে সহযোগিতা করতে হবে। আমি মনে করি, এখন আমাদের কাজ হচ্ছে, ঐক্যকে অটুট রাখা, নিজেরা ধৈর্যশীল হওয়া। একেবারেই এই ধরনের কর্মকাণ্ড যাতে কেউ করতে না পারে, তার জন্য প্রতিরোধ সৃষ্টি করা।’