নিজস্ব প্রতিবেদক, ডুমুরিয়া
ডুমুরিয়া উপজেলার মিকশিমিল বাজার সংলগ্ন বটতলা সার্বজনীন দুর্গামন্দিরে এবার ১৪৭টি প্রতিমা নিয়ে চলছে শারদীয় দুর্গা পূজা। মন্দিরের ভিতরে ঢুকলেই দেখা যাবে সারিবদ্ধভাবে রাখা দেবদেবীর বিভিন্ন প্রতিমা। ১৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মূলত দুর্গা প্রতিমার সঙ্গে এমন ১৪৭টি প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে।
জানা যায়, মন্দিরটিতে দেবী দুর্গার ১০ রূপের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। কালী, ঊর্ধ্বতারা, ত্রিপুরা, ভূবনস্বরী, ভৈরবী, ছিন্নমস্তা, ধোমাবতী, বগলামুখি, মাতঙ্গী ও কমলা দেবী। এছাড়াও রয়েছে শিবপার্বতীর শুভ পরিণয়ের অগ্নিসাক্ষীর দৃশ্য, হনুমান কর্তৃক জয়মনিকালী উদ্ধার ও ধ্রুবের হরিদর্শন। পাশেই রামায়ন অবলম্বনে অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে শ্রীরামচন্দ্রের ঐতিহাসিক তাড়কা রাক্ষসী বধের দৃশ্য। এসব প্রতিমার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে রামায়ন, মহাভারত, গীতা ও পুরাণসহ বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থের পৌরাণিক কাহিনী।
সরেজমিনে দেখা যায়, চুকনগর দৌলতপুর সড়কের পাশেই তৈরি করা হয়েছে বিশাল গেট। সনাতন ধর্মাবলম্বী বিভিন্ন বয়সী ভক্তরা ভিড় করছেন মন্দির প্রাঙ্গণে। করা হয়েছে বর্ণিল আলোকসজ্জা, আনা হয়েছে সাউন্ড সিস্টেম। মন্দিরের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছেন ৬ জন আনসার সদস্য। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ও আশপাশের উপজেলা থেকে লোকজন প্রতিমাগুলো দেখতে আসছেন। দর্শনার্থীরা বলছেন, এক মন্দিরে একসঙ্গে এতোগুলো প্রতিমা দেখে খুবই ভালো লাগছে।
মন্দির কমিটি জানান, প্রতিমাগুলো তৈরিতে ব্যয় হয়েছে আড়াই লাখ টাকা। ৪ জন ভাস্কর ৩ মাস কাজ করে এগুলো তৈরি করেছেন। খুলনা জেলার মধ্যে আর কোনো মন্দিরে এত বেশি সংখ্যক প্রতিমা নেই। হিন্দু সংগঠনের নেতারা বলছেন এবছর বন্যাসহ নানাবিধ কারণে বিগত বছরের তুলনায় এবার কম মন্দিরে পূজা হচ্ছে।
ডুমুরিয়া থানা পুলিশের ওসি শেখ শাহিনুর রহমান জানান, শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে কয়েকটি স্তরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে ডিবির টিম, থানা পুলিশ, সাইবার মনিটরিং আছে। এছাড়া সাদা পোশাকে এবং যৌথবাহিনীর সদস্য নিরাপত্তায় কাজ করছে। যাতে দর্শনার্থী সহ পূজারীরা নিরাপদে পূজা উদযাপন করতে পারেন।
এছাড়াও এ মন্দিরের পাশে বিনা খরচে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করছে ডুমুরিয়া ফ্রেন্ডস ক্লাবের সদস্যরা। এ পর্যন্ত ৪০০ জনের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও ব্লাড প্রেসার পরীক্ষা করেছে তারা।