বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বাজার মনিটারিং জোরদার করে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ঠেকাতে ভোক্তা অধিকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম। জনস্বার্থে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রয়োজন হলে সেটি করা হবে বলেও দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম আরও বলেন, পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে আমাদের প্রধান দায়িত্ব ছিল জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা। বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক। তবে গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে শহরের যানজট। যানজট নিরসন ও পরিছন্ন শহর গড়ার বিষয়ে কোন রকম ছাড় দেয়া হবে না। সমন্বিত উদ্যোগে পরিছন্ন ও যানজটমুক্ত শহর আমরা যশোরবাসীকে উপহার দিতে চাই। প্রয়োজনে বিশেষ পর্ববেক্ষণ দল গঠন এবং শহরে অবৈধ যানবহন প্রবেশের বিরুদ্ধে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান করার কথাও বলেছেন তিনি।
আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উন্মুক্ত আলোচনায় ট্রাফিক ইনস্পেক্টর মাফুজুর রহমান বলেন, শহরে যানজটের অন্যতম কারণ অবৈধ অটো রিকশা ও ইজিবাইক। ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি ইজিবাইক শহরে প্রবেশের ফলে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় পৌরসভার সহযোগিতা ছাড়া যানজট নিরসন সম্ভব হচ্ছে না।
পৌর প্রশাসক রফিকুল হাসান বলেন, যানজট নিরসনে পৌরসভার পক্ষ থেকে পাইলট পরিকল্পনা করা হচ্ছে। শহরের প্রবেশমুখে চৌকি বসিয়ে অবৈধ যানবহন প্রবেশে বাধাসহ একাধিক পরিকল্পনা করা হয়েছে। দ্রুতই সেগুলো কার্যকর করা হবে।
সভায় চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা বলেন, যশোরের চৌগাছা উপজেলার বল্লভপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি বল্লভপুর বাঁওড়টির বৈধ ইজারা গ্রহীতা। কিন্তু বাঁওড়ের মাছ লুট করছে একটি চক্র। এতে ইজারাদার সমিতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
এ সময় জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বিষয়টি আমলে নিয়ে সভায় উপস্থিত পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দিন আহমেদকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিলে পুলিশ সুপার এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালসহ শরের কয়েকটি বেসরকারি ক্লিনিকে মাদকসেবীদের আনাগোনা বেড়েছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর মাদক সেবনের নিরাপদ স্থান হিসেবে হাসপাতালকে বেছে নিয়েছে তারা। এতে করে রোগী ও স্বজনরা হুমকির মুখে পড়ছেন। এ বিষয়ে জেলা পুলিশকে বিশেষ অভিযানের আহবান জানান তিনি।
পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, পরিবর্তীত প্রেক্ষাপটে পুলিশিং কার্যক্রম অনেকটা থমকে গিয়েছিল। বর্তমানে পুলিশ স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে। কিন্তু এখনো ট্রাফিক বিভাগ পরিপূর্ণ কাজ শুরু করতে না পারায় শহরের যানজট সমস্যা কাটছে না। সেক্ষেত্রে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযানে কথা জানিয়েছেন তিনি।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিআরটিএ যশোরের উপপরিচালক মাহফুজুর রহমান, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, মানবাধিকার কর্মী বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক প্রমুখ।