কেশবপুর সংবাদদাতা
যশোরের কেশবপুর উপজেলার প্রতাবপুর গ্রামে রফিকুল ইসলামের কন্যা রাফিজা আক্তার নদী (২০) হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন থানা পুলিশসহ বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।
গত ১৭ ডিসেম্বর সকালে রাফিজাকে তার স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন নির্যাতনসহ পিটিয়ে হত্যার মরদেহ ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করে। পুলিশের প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্টে নিহতের বাম পাশের থুতনী ও কানের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে রাফিজার পরিবারের দাবি রাফিজা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ হত্যা মামলা না নিয়ে একটি ইউডি মামলা রেকর্ড করেছে।
থানা পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, কেশবপুর উপজেলার প্রতাবপুর গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক রফিকুল ইসলামের কন্যা রাফিজা আক্তার নদীর গত দেড় বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে পার্শ্ববর্তি মণিরামপুর উপজেলার আটঘরা গ্রামের শিবলী নোমানের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর ২/৩ মাস পর থেকেই নেশাসক্ত স্বামী রোমান দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে মানসিক ও দৈহিক নির্যাতন শুরু করে। এরই মধ্যে রাফিজার গর্ভে দু’দফা গর্ভপাত ঘটায়। একপর্যায়ে নির্যাতনের ফলে গতবছরের ১৭ ডিসেম্বর মৃত্যু হলে, তার লাশ ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখে পরিবারের সদস্য গা ঢাকা দেয়।
এ ঘটনায় রাফিজার ভাই থানা পুলিশকে জানান যৌতুকের কারণে তার বোনকে হত্যা করা হয়েছে জানালেও পুলিশ হত্যা মামলা না নিয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করে। এদিকে, রাফিজার মৃত্যুর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে রোমানসহ তার পবিবারকে আইনের হাত থেকে রক্ষা করতে এলাকার ইউপি মেম্বার রবিউল ইসলাম ও মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী আমেনা খাতুন দৌঁড়ঝাপ দিচ্ছেন বলে রাফিজার পরিবারের সদস্যরা জানান।
অভিযোগের বাদী রাফিজার বড়ভাই মাহামুদ হাসান সাগর বলেন, যৌতুকের দাবিতে তার বোন রাফিজাকে তার স্বামী রোমান, শশুর ও শাশুড়ি মানসিক এবং শারীরিকভাবে নির্যাতনের মাধ্যমে তাকে হত্যা করেছে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তারা মিয়া বলেন, ঘটনার দিন রাফিজার ভাইয়ের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে যশোর মর্গে পাঠানো হয়। প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্টে দেখা যায় নিহতের মুখের ডান পাশে ছেলা ও ফোলা আঘাতের চিহ্ন হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। পরবর্তিতে তার পোস্টমর্টেম রিপোর্ট হাতে পেলে পরবর্তি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।