বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে ২৫ মামলার আসামি ও শীর্ষ সন্ত্রাসী রাকিব হোসেন (৩২) ওরফে ভাইপো রাকিবকে গুলি করে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। আহতের মা ফয়জুন্নাহার মঙ্গলবার আটজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। এছাড়া অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরো ৪/৫জনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।
আসামিরা হলেন, সদর উপজেলার চাঁচড়া ইসমাইল কোলনীর কাজী খালিদ হোসেনের ছেলে ইমন, শংকরপুর পশু হাসপাতালের পেছনের বর্তমানে পুলেরহাট এলাকার মৃত পিয়ারু কাজীর ছেলে কাজী তারেক, চাঁচড়া জামতলা এলাকার তারেকের ছেলে তানভীর, মৃত জলিল মুন্সির ছেলে রিয়াজ, চাঁচড়া রায়পাড়ার তৈয়ব আলীর ছেলে সাব্বির, শংকরপুর সার গোডাউনের পেছনের মৃত আফজাল কাজীর ছেলে আকাশ, ইসকেনের ছেলে ইয়াসিন এবং বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক মোড়ের কানা বাবুর ছেলে সুমন ওরফে ট্যাটু সুমন ।
ফয়জুন্নাহার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, তার ছেলে রাকিব চাঁচড়া বাবলাতলার মোড়ে মাছের পোনার ব্যবসা করেন। আসামিরা মাদকদ্রব্য ওই এলাকায় সরবারহ করে থাকে। তার ছেলে আসামিদের নিষেধ করায় তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। গত ১৯ জানুয়ারি তার ছেলে বাড়িতে ছিল। রাত পৌনে ১০টার দিকে আসামি তানভীর তার বাড়ির মধ্যে ঢোকে এবং কথা আছে বলে ডাক দিয়ে বাইরে নিয়ে যায়। রাকিব তার কথামতো বাড়ির সামনে রাস্তার ওপর যান। রাকিবের মা নিজেও রাকিবের পিছু নেয়। সে সময় আসামি কাজী তারেকের নির্দেশে ইমন পরপর দুইটি গুলি করে। গুলি দুটি বুকের দুই পাশে লাগে। এরপর আরো দুটি গুলি করলে একটি বাম হাতের বাহুতে অপরটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। গুলি করার সাথে সাথে আসামিরা ৪/৫টি মোটরসাইকেলে করে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে তিনিসহ আশেপাশের লোকজন এগিয়ে গিয়ে তার ছেলেকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আবু শাহরিয়ার অর্ণব, খুলনার ট্রাকচালক, হেলপার, শংকরপুরের রিপন, জুম্মানসহ ৮টি হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজিসহ ২৫টি মামলা রয়েছে। সে শহরের শংকরপুর সার গোডাউন এলাকার তৌহিদুল ইসলামের ছেলে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত যাদের নাম বলা হচ্ছে তারাও ভাইপো রাকিবের সহযোগী। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। একাধিক ভুক্তভোগী জানান, আওয়ামী লীগের নেতারা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন রাকিবকে। তবে এর ভুক্তভোগী হয়েছে সাধারণ মানুষ।
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) কাজী বাবুল বলেন, ‘রাকিবের হত্যা চেষ্টার মামলা হয়েছে। পুলিশ আসামিদের আটকে অভিযান অব্যহত রেখেছে। তিনি জানান, রাকিব যশোরের চিহ্নিত সন্ত্রাসী। পুলিশের মামলার নথিপত্র ডিজিটাল হয় ২০১৭ সালে। ডিজিটাল তালিকা অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে হত্যা, বিস্ফোরক, অস্ত্র, চাঁদাবাজি, হত্যাচেষ্টার ২৫টি মামলা রয়েছে। তবে অ্যানালগ মামলার নথি ঘাঁটলে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। সবচেয়ে হত্যা, হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক মামলা বেশি তার বিরুদ্ধে। সব মামলা বিচারাধীন।’ রাকিবের বাবা তৌহিদুল জানান, ‘তার শরীরে তিনটি গুলি অপারেশন করে বের করা হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।’