স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ
মঙ্গল শোভাযাত্রা নাকি বৈশাখী শোভাযাত্রা নামে হবে এবারের বর্ষবরণ। সেটি নিয়ে শুরু হয়েছে জাতীয় পর্যায়ের বিতর্ক। তবে বিতর্ক যাই হোক, শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের আলোকে বর্ণাঢ্য আয়োজনে শোভাযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছে যশোরের চারুপীঠ আর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট। বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বরণে এবারের থিম ‘যতনে রাখি এ ধরণীরে’। এই মূল প্রতিপাদ্য স্লোগান সামনে রেখে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা আয়োজনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কর্মীরা।
জানা যায়, যশোরে বাংলা বর্ষবরণের মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস প্রায় ৪ দশকের। ১৯৮৫ সালে সর্বপ্রথম যশোরে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করে চারুপীঠ আর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট। সেই থেকে সময়ের পরিক্রমায় সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে উৎসবটি।
চারুপীঠ আর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিটের এ বছরের পরিবেশনায় প্রকৃতির থিমে শোভাযাত্রায় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা। সেই শোভাযাত্রায় থাকছে পাহাড়, গাছ, বানর, হরিণ, বাঘসহ প্রায় ২শতাধিক বিভিন্ন ধরণের মুখোশ। প্রায় দেড় মাস ধরে বৈশাখী শোভাযাত্রার উপকরণ তৈরি করতে চারুপীঠের কার্যালয়ে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।
চারুপীঠ আর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট যশোরের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ভাস্কর মাহবুব জামাল শামীম বলেন, ১৯৮৫ সালে যশোর থেকে বৈশাখ উৎযাপনের লক্ষ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়।
তখন আর্ট ইনস্টিটিউটের ৫শতাধিক শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ফুল, বাঘ, পাখি, প্যাচা, সাপসহ বিভিন্ন ধরণের প্রতীকি তৈরি করে বাংলা বছরের প্রথম দিন শহরে র্যালি বের করে। মূলত একুশে ফেব্রুয়ারির প্রভাতফেরির অসাম্প্রদায়িক চিন্তা চেতনা নিয়ে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের মিলনমেলায় পরিণত করতে এমন ব্যতিক্রম আয়োজন করা হয়। সমাজের সকল মানুষকে এক কাতারে আনতে পেরে আমরা নিজেরা যেমন আনন্দিত, তেমনি সমাজের সকল শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে এই আনন্দ তরঙ্গ আকারে ছড়িয়ে পড়ে।
চারুপীঠ আর্ট রিসার্চ ইনর্স্টিটিউট যশোরের সাধারণ সম্পাদক মামুনূর রশীদ জানান, পরিবর্তীত প্রেক্ষাপটে বৈশাখী উৎসবের আয়োজনে কোনো বাধ্যবাধকতার মুখে পড়তে হচ্ছে না তাদের। সারাবিশ্বের মঙ্গল কামনা করে প্রকৃতির সংমিশ্রণে এ বছর যথাযথভাবে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছি। যশোরের প্রায় ৩৭ টা সাংস্কৃতিক সংগঠন যৌথভাবে বর্ষবরণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শোভাযাত্রার নাম নিয়ে বিভ্রান্তি থাকলেও যথাসময়ে চূড়ান্ত নামেই শোভাযাত্রা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রা বৃহৎ অর্থে বোঝায়। সামগ্রিক মানুষের মঙ্গল কামনা করে। যে নামেই অনুষ্ঠান হোক না কেন কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে না।