বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। কিন্তু হাসপাতালগুলো নেই পর্যাপ্ত কলেরার স্যালাইন। সেই সঙ্গে চিকিৎসক সংকটও প্রকট হয়েছে। রোববার যশোর জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় এই তথ্য তুলে ধরেন সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা। তিনি বলেন, সম্প্রতি জেলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সরকারিভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণে কলেরা স্যালাইনের মজুদ নেই। ফলে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান তিনি।
জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা আরও জানান, জেলার আটটি উপজেলাতেই অল্প সংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে সরকারি হাসপাতালগুলো পরিচালিত হচ্ছে। এই কারণে চিকিৎসকদের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। রোগীদের প্রয়োজনীয় সেবা প্রদানে সমস্যা হচ্ছে।
উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় যশোর পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রফিকুল হাসান জানান, পৌরবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে আরও চারটি টাওয়ার লাইট স্থাপন করা হবে। এর মধ্যে মণিহারের সিটি কলেজ এলাকায় একটি এবং শহরের নিউ মার্কেট, চাঁচড়া মোড় ও পালবাড়ি মোড়ে একটি করে টাওয়ার লাইট স্থাপন করা হবে। এছাড়াও বর্ষার আগে পৌর এলাকার ড্রেন পরিস্কারের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হুসাইন শাফায়াত বলেন, সীমিত সম্পদ থাকার সত্ত্বেও তারা সর্বোচ্চ মানের সেবা প্রদানের চেষ্টা করছেন। ৫ আগস্টের পর হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটি ভেঙে যাওয়ায় উন্নয়নমূলক কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কমিটির সভাপতির পদ স্থানীয় সংসদ সদস্যের অধীনে থাকায় বর্তমানে কমিটি নিষ্ক্রিয় রয়েছে। তিনি কমিটি সক্রিয় করার বিষয়ে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেন, জনদুর্ভোগ কমাতে সরকারিভাবে যেকোনো কাজের আগে স্থানীয় জনসাধারণের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে। এতে জনদুর্ভোগ কমার পাশাপাশি কাজের মানও উন্নত হবে। বিশেষ করে সড়ক সংস্কার, ব্রিজ নির্মাণ ও ড্রেন পরিস্কারসহ এলাকা ভিত্তিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার সময় স্থানীয় নাগরিকদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়ার কথা বলেন তিনি।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, যেকোনো এলাকা থেকে জনদুর্ভোগের অভিযোগ এলে সেটিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। সভায় তিনি চিত্রা মোড়ে অবস্থিত জাবির ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের অবকাঠামোগত অবস্থান নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। ঝড় এলে হোটেলের কাঁচ ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি ফায়ার সার্ভিসকে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখার এবং প্রয়োজনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেন।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আছাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-সার্কেল) রাজিবুল ইসলাম, গণপূর্ত অধিদপ্তর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ ব্যানার্জীসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।