বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের ঝিকরগাছায় রফিকুল ইসলামকে (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে গাছে বেঁধে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ তুলে জড়িতদের বিচারের দাবি করেছে নিহতের স্বজনেরা। আজ শনিবার দুপুুরে প্রেস ক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন নিহতের মেয়ে মিনি খাতুন। সংবাদ সম্মেলনে মিনি অভিযোগ করেন, হত্যার ঘটনায় মামলা হলেও কাউকে আটক করেনি পুলিশ। বিভিন্ন সময়ে অভিযুক্তরা মামলাটি প্রত্যাহার করে মিমাংসার চাপ দিচ্ছেন।
অভিযুক্তরা বিএনপি নেতা হওয়াতে পুলিশের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করেন তিনি। নিহত রফিকুল ইসলাম হাজিরবাগ ইউনিয়নের সোনাকুড় গ্রামের বাসিন্দা। গত ২ জুলাই তিনি হত্যার শিকার হন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নিহত রফিকুল ইসলাম প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে প্রতিবেশী ঘরজামাই জহিরুল ইসলাম স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সহযোগিতায় রফিকুলের ৪ কাঠা জমি দখলের টেষ্টা করছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় ২ জুলাই সোনাকুড় গ্রামের জহির উদ্দিনের চায়ের দোকানে পাশে একটি মেহগনি বাগানে উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি তমেজ উদ্দিনের ছেলে নাজমুল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক মব সৃষ্টি করে। সেখানে তার হাত ও পা গাছের সঙ্গে বেঁধে ৪৫ মিনিট শারীরিক নির্যাতন করে। অমানসিক নির্যাতনে ঘটনাস্থলেই রফিকুল মারা যান। এই ঘটনায় নিহতের মেয়ে মিনি খাতুন বিএনপি নেতার ছেলে নাজমুল ইসলামসহ ১২ জনকে আসামি করে জুডিসিয়াল আদালতে মামলা করেন। মামলার করে আসামিরা বিভিন্ন সময়ে হামলা ভয়ভিতি করার চেষ্টা করছে। এমনকি মামলা প্রত্যাহার করে মীমিংসা করার জন্য চাপ দিচ্ছেন। এসব ঘটনায় থানায় গেলে পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
মিনি খাতুন বলেন, ‘মামলার আসামিদের তো ধরা হচ্ছে না, বরং হুমকি নিরাপত্তার জিডি করতে গেলে পুলিশ না নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। এছাড়া আসামিরা তার বাবার চার কাঠা জমি দখলে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।’
স্থানীয়রা জানান, নিহত রফিকুল মাদক সেবনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সোনাকুড় গ্রামের আজগার আলীর জামাতা জহর আলীর সঙ্গে জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ ছিলো প্রতিবেশি রফিকুলের। ঘটনার দুদিন আগে জহুর আলী শ্বশুরবাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে স্থানীয় বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে জহিরের চায়ের দোকানের সামনে পৌঁছালে হঠাৎ প্রতিবেশী রফিকুল ইসলাম তার মাথায় দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। এ ঘটনার জেরে স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হয়ে রফিকুলকে দড়ি দিয়ে বেঁধে গণপিটুনি দেয়। একপর্যায়ে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। অভিযুক্তনাজমুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘ঘটনাটি নিয়ে থানায় ও আদালতে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। থানার মামলাটিতে চারজন আসামি। তারা সবাই আদালত থেকে জামিন নিয়ে এসেছে। পুলিশের পক্ষপাতিত্বের কোন প্রশ্নেই উঠে না। বরং তারা মামলাটি মিমাংসার জন্য এলাকায় বিভিন্ন মহলে দেন দরবার করছেন।’