বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যার দায়ে জহিরুল ইসলাম ওরফে বাবু নামের এক যুবককে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৬ষ্ঠ আদালতের বিচারক জাকির হোসেন টিপু এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পিপি সাবেরুল হক সাবু। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বাবু যশোর সদর উপজেলার জগন্নাথপুর বিশ্বাসপাড়ার মশিউর বিশ্বাসের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন বাবু।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, অভয়নগর উপজেলার সিদ্ধিপাশা গ্রামে জহিরুল ইসলামের শ্বশুরবাড়ি। সেখান থেকে স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বিথি (৩২) এবং দুই মেয়ে সুমাইয়া (৯) ও সাফিয়া (২) কে নিয়ে ২০২২ সালের ১৫ জুলাই দুপুরে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন বাবু। এর আগে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ফেরার পথে অভয়নগর উপজেলার চাঁপাতলা গ্রামে স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন বাবু। এরপর মরদেহগুলো যশোর-খুলনা মহাসড়কের পাশে চেঙ্গুটিয়া এলাকার একটি বাগানে ফেলে রাখেন। পরে পরিবারের কাছে বিষয়টি জানিয়ে নিজেই বসুন্দিয়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে গিয়ে সব খুলে বলেন। এরপর তাকে ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়।
এ ঘটনায় সাবিনা ইয়াসমিন বিথির বাবা মুজিবর রহমান অভয়নগর থানায় মামলা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ১১ বছর আগে বাবুর সঙ্গে বিথির বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ চলছিল। এছাড়া বিভিন্ন দাবিতে বিথিকে মারধর করতেন বাবু। একপর্যায়ে তাকে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা দেয়া হয়। তারপরও নির্যাতন থামেনি। ঘটনার দিনও ঝগড়া এবং মারধর করা হয় বিথিকে। বাড়িতে নেয়ার পথে তিনজনকেই শ্বাসরোধে হত্যা করেন বাবু বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
পুলিশের তদন্তেও উঠে আসে একই তথ্য। একপর্যায়ে অভয়নগর থানার এসআই গোলাম হোসেন ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর বাবুর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। সোমবার এ মামলার রায় ঘোষণার সময় আদালত বাবুকে ফাঁসির আদেশ দেন এবং কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালতের পিপি সাবেরুল হক সাবু বলেন, ‘দণ্ডপ্রাপ্ত বাবু মাদকাসক্ত ছিলেন। ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক রায় ঘোষণা করেছেন।