বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আলী রেজা রাজুর অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। সোমবার কবর জিয়ারত, দোয়া মাহফিল ও স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন আলী রেজা রাজুর মেয়ের জামাতা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা ও ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ।
বিকালে যশোর জিলা পরিষদ মিলনায়তনে স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এতে সম্মানিত অতিথি ছিলেন নায়ক ফেরদৌস আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আলী রেজা রাজু খুব ভালো মনের মানুষ ছিলেন। মানুষের উন্নয়নে তিনি কাজ করেছেন। তার সাথে থেকে আমি শিখেছি গণমানুষের নেতা হতে হলে কি করতে হয়। মানুষের কাছে যেয়ে কিভাবে মিশতে হয়। চলচ্চিত্র জগত থেকে জনপ্রতিনিধি হওয়ার ক্ষেত্রে আমার শ্বশুরের অবদান বেশি। অভিনেতা থাকাকালীন আমি অনুভব করলাম, মানুষের হৃদয়ের আজীবন নায়ক হিসাবে বেঁচে থাকতে হলে আমাকে মানুষের সেবক হতে হবে। সেই প্রত্যাশা থেকেই আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে গেলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার প্রতি আস্থা বিশ্বাস রেখে ঢাকা-১০ আসনের দায়িত্ব দিলেন।
আমি জানি এর পিছনে আমার শ্বশুরের অবদান ছিলো অনেক বেশি। আলী রেজা সৎ সাহসী ভালো মানুষ ছিলেন। যখন সংসদে দেশের বিভিন্ন বড় বড় রাজনীতিবিদরা আমার শ্বশুরের সুনাম করে, তখন আমাকে মানবসেবা করতে অনুপ্রেরণিত করে। আলী রেজার মতো নেতা আমাদের দেশে আরো বেশি তৈরি হতে হবে। যশোরের উন্নয়নে বা আলী রেজার শেষ ইচ্ছা বাস্তবায়নে কোন কিছুর বাকী থাকে, তাহলে আমাকে বলবেন। ডাকবেন. আমি ও আমার পরিবার সব সময় যশোরবাসীর পাশে থাকবো। কর্মের মাধ্যমে আলী রেজা রাজু চিরদিন যশোরবাসীর হৃদয়ে থাকবেন। তার বিদেহী আত্মার জন্য দোয়া চেয়েছেন নায়ক ফেরদৌস।
সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ বিপুলের আয়োজনে স্মরণসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন। প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সস্পাদক শাহীন চাকলাদার।
জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ, সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহমুদ হাসান বিপু, শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ লিটন, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ বিপুল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী, পৌর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান রনি। এর আগে কবর জিয়ারত ও ফুলেল শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। পারিবারিকভাবেও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
২০১৬ সালের ১৫ জুলাই ৭১ বছর বয়সে আলী রেজা রাজু মারা যান। আলী রেজা রাজু ষাটের দশকে ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমে রাজনীতিতে আসেন। তিনি যশোর পৌরসভার চেয়ারম্যান, যশোর সদর আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যশোরে বিএনপির সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের যোগদান করেন এবং সে বছর সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এমপি হন।
তিনি ২০০৪ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত তরিকুল ইসলাম এবং সাবেক মন্ত্রী খালেদুর রহমান টিটোর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। সংসদ সদস্য ছাড়াও আলী রেজা রাজু বিভিন্ন সময় যশোর সদর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, যশোর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং যশোর পৌরসভার চেয়ারম্যান (মেয়র), যশোর পৌরসভার একাধিকবার কমিশনার (কাউন্সিলর) নির্বাচিত হন।