বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে সড়কে দায়িত্বরত এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে ঘুষি মেরে নাক ফটিয়ে দেয়ার ঘটনায় শাওন ইসলাম সবুজ (২৫) নামে এক ছাত্রদল নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার রাত ৮টার দিকে তাকে আটক করে পুলিশ। আটক শাওন ইসলাম যশোর সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ও শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোড এলাকার মো. শাহিনের ছেলে। আর ভুক্তভোগী ট্রাফিক পুলিশ সদস্য কে এম শরিফুল ইসলাম। রোববার বিকেলে ছাত্রদল নেতাকে আদালতে পাঠালে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যার দিকে ট্রাফিক পুলিশ সদস্য কে এম শরিফুল ইসলাম (কন্সটেবল নম্বর ১৭১১) শহরের জেল রোডে ল্যাব এইড হসপিটালের সামনে ডিউটি করছিলেন। সেখানে রাস্তার ওপর মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন যশোর সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শাওন ইসলাম। রাস্তায় যানজট তৈরি হলে তাকে মোটরসাইকেল সরিয়ে নিতে বলেন পুলিশ সদস্য শরিফুল ইসলাম। এ সময় শাওন তার সাথে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। দুই জনের তর্কাতর্কির একপর্যায়ে শাওন ঘুষি মেরে ট্রাফিক সদস্য শরিফুলের নাক ফাটিয়ে দেন। এ সময় পথচারীরা জড়ো হয় তাকে রক্ষা করেন। খবর পেয়ে ট্রাফিক পুলিশ অফিস থেকে কয়েকজন সদস্য সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে শাওনকে আটক করে এবং তাকে কোতয়ালি থানায় সোপর্দ করা হয়।
ভুক্তভোগী ট্রাফিক সদস্য শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বিকেলে হাসপাতাল মোড়ে দায়িত্ব পালন করছিলাম। এ সময় শাওন নামে এক যুবক সহযোগী আরেকজনকে নিয়ে সড়কের বাম পাশে মোটরসাইকেলটি রাখে। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়। তাই ওই যুবককে গাড়িটি সরানোর জন্য বলি। তখন শাওন নামে ওই যুবক ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে বলে, ‘তোর টিআই আমাকে গাড়ি সরাইতে বলতে পারে না, আর তুই গাড়ি সরাইতে বলিস। তোর এতো সাহস হয় কিভাবে।’ এরপর পুনরায় তাকে গাড়ি সরাতে বললে ক্ষিপ্ত হয়ে শাওন আমাকে মারধর করতে থাকে। পরে পথচারী ও অন্য সহকর্মীরা উদ্ধার করে আমাকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নিয়ে আসে।’
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি কাজী বাবুল হোসেন জানান, ‘পুলিশ সদস্যকে আহত করায় শাওন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা ও মারপিটের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। রোববার আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর বলেন, ‘সিটি কলেজ ছাত্রদলের সেক্রেটারি শাওন ইসলাম সবুজের সাথে ট্রাফিক পুলিশের বাকবিতন্ডা হয়েছে শুনেছি। নাক ফাটানোর বিষয়টি জানি না। এই ঘটনায় আমরা বিব্রত। ব্যক্তির দায় তো সংগঠন নেবে না। তবে সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোন ছাড় দেয়া হবে না।’