বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বাংলাদেশ ব্যাংকের আয়োজনে গ্রাহক সচেতনতা সপ্তাহ’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, খুলনা বিভাগের জেলাগুলোতে শিল্পায়নে ব্যাংকগুলো কোন ভূমিকা রাখতে পারছেনা। তারা এখান থেকে আমানত সংগ্রহ করে অন্য জেলায় নিয়ে যাচ্ছে, যা সমীচীন নয়। কেননা এখানকার আমানত দিয়েই ব্যাংকগুলোকে ঋণ দিতে হবে এই অঞ্চলের গ্রাহকদের। এই আমানতের দাবিদার এখানকার গ্রাহকরা। খুলনা বিভাগের গ্রাহকরা মাত্র ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যবহার করছে। অথচ ঢাকা-চট্টগ্রামের গ্রাহকরা ব্যবহার করছেন ৮-৪০ লাখ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলো খুলনা বিভাগ থেকে আমানত সংগ্রহ করে ঢাকা-চট্টগ্রামের গ্রাহকদের ঋণ দিচ্ছে।
শনিবার যশোর শেখ হাসিনা সফটওয়ার টেকনোলজি পার্কে এই গ্রাহক সচেতনতা সপ্তাহ’র উদ্বোধন করা হয়েছে। যার সার্বিক সহযোগিতায় ছিল বেসরকারি খাতের ঢাকা ব্যাংক পিএলসি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক (এফআইসিএসডি) আবু হেনা হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গ্রাহক সচেতনতা সপ্তাহর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এসএম হাসান রেজা। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম, পরিচালক (এফআইসিএসডি) শায়েমা ইসলাম ও ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) একেএম শাহনেওয়াজ। এ সময় খুলনা বিভাগে কর্মরত সরকারি বেসরকারি সব ব্যাংকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, খুলনা বিভাগের জেলাগুলো শিল্পায়নের ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। এখানে তেমন কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছেনা। শিল্পায়নে জেলাগুলো অবহেলিত। যদিও গ্যাস সংকট থেকে গেছে। তারপরও উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। আর যারা সাহস করে এগিয়ে আসবে তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করে ব্যাংকগুলোতে ঋণদান করতে হবে। শিল্পায়ন হলে মানুষের কর্মসংস্থান হবে। তাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে। এমনকি এখানকার জেলাগুলোতে বিপুল ফসল ও সবজি উৎপাদন করলেও ব্যাংকগুলো কৃষকদের ঋণ দিচ্ছেনা। এ কারণে অনেক ব্যাংকে আমরা জরিমানা করছি। খুলনা বিভাগের উৎপাদিত সবজি ও ফুল সারা দেশে যাচ্ছে। এই অঞ্চলে বিপুল পরিমান ধান-পাট উৎপাদন হয়ে থাকে। অথচ এখানকরা কৃষকরা স্বল্প সুদে ব্যাংক পাচ্ছেনা।
কিছু ব্যাংক গ্রাহকদেরকে ঠকাচ্ছেন। তারা ডিপোজিটে যা পাওনা তা গ্রাহকদেরকে দিচ্ছেনা। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রাহকদের সচেতন করতে কাজ করছে। অথচ একটি দেশের উন্নয়নের অন্যতম চাবিকাঠি হলো শক্তিশালি ব্যাংকখাত। ব্যাংকারদের গ্রাহকদের সাথে সেতু বন্ধন গড়ে তুলতে হবে। তাহলে দেশের ব্যাংকখাত অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
বক্তারা বলেন, প্রযুক্তির কারণে গ্রাহকরা যেমন উপকৃত হচ্ছেন, তেমনি প্রতারণারও শিকার হচ্ছেন। প্রতারণার শিকার হয়ে গ্রাহকরা বাংলাদেশ ব্যাংকে অভিযোগ করছেন। এজন্য ব্যাংকারদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। যেন গ্রাহকের আমানত জালিয়াতি করে কেউ হাতিয়ে নিতে না পারে।