স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ
যশোরের বাজারে ঈদ সামনে রেখে বেড়েছে আতর, সুরমা বিক্রি। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ঈদের কেনাকাটার মধ্যে বড় একটি বাজেট রাখেন আতর, সুরমা, টুপি, পাঞ্জাবি, পাজামা, জায়নামাজ ও তসবীহ কেনার জন্য। প্রতিবছর ঈদের আগে অন্যান্য কেনা কাটার সাথে একটু সুগন্ধি, সুন্দর একটা টুপি, দৃষ্টিনন্দন জায়নামাজ না কিনলে ঈদের কেনাকাটা যেন অপূর্ণ থেকে যায়।
ইসলামের দৃষ্টিতে সুগন্ধি ব্যবহার করা সুন্নত। ইসলাম ধর্মের প্রচারক ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) সুগন্ধি ব্যবহার করতেন। সেই ধারাবাহিকতায় নবীর সুন্নত চর্চা করতে গিয়ে মুসলিম ধর্মের আনুসারিরা আতর, সুরমা ব্যবহার করে থাকেন।
যশোরের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বড় বড় মসজিদ ও মার্কেটের সামনে অস্থায়ী দোকানে বিক্রি হচ্ছে আতর, সুরমা ,টুপি, পাজামা, পাঞ্জাবি ও তসবিহ। আবার কেউ কেউ স্থায়ী দোকান নিয়ে সারাবছর এই সব পণ্যগুলো বিক্রি করে আসছেন।
শহরের গাড়িখানা রোডের জামে মসজিদ লেনে প্রবেশের মুখে বা হাতের দ্বিতীয়তলায় ইসলামী পণ্যের বিশ^স্ত প্রতিষ্ঠান ব্রান্ডিং শিরোনামে গড়ে তোলা হয়েছে “জমজম” নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যৌথ মালিকানায় মাহফিজুর রহমান দেশি-বিদেশি পাঞ্জাবীর কাপড়, পাগড়ি, বোরকার কাপড় ও আতরের বিশাল সমাহার নিয়ে এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছেন।
এখানে বিভিন্ন দেশের ৪০ থেকে ৫০ ধরনের নামি দামি আতর, সুরমা রয়েছে। সর্বনিম্ন ১৩০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকার আতর রয়েছে। আল হারামাইন নামের আতর ৩ মিলি ৬০ হাজার টাকা ও এহসাসাল আরাবি ৩ মিলি ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এই দোকানে সুরমা রয়েছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের। দেশি সুরমার একটি কৌটার দাম ১৫০ টাকা ও পাকিস্তানি সুরমার একটি কৌটার দাম ২শ’ টাকা। শুধু আতর সুরমা নয় এখানে বিভিন্ন দেশের কুরআন শরীফ, কিতাব, জায়নামাজ, টুপি, তসবীহ, পাগড়ি, রুমাল, কাশ্মীরী শাল, ছদরিয়া, গেঞ্জি, চামড়ার মোজা, আংকটি, তাবলিগী বেডিং, লুঙ্গি, ঘি, খেজুর, ত্বীন ফল, ইরানী জাফরান, মধু, কারোজিরার তেল, সরিষার তেল, মিক্স হানি নাট, ইসলামী ওয়ালম্যাট, উন্নত মানের আগরবাতি বিক্রি করা হচ্ছে। এখানে ৪৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৪৫শ’ টাকা মূল্যের জায়নামাজ বিক্রি হয়। অন্যদিকে একটি তুর্কি টুপির দাম ১৫শ’ পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
জমজম ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় কর্মী আরাফাত ইসলাম আরাফ বলেন, রোজার শুরু থেকে টুকটাক কেনাবেচা হলেও আশা করা যায় ২০ রোজার পরে বিক্রি বাড়বে। ঈদ সামনে রেখে আতর, সুরমাসহ জায়নামাজ, পাঞ্জাবির চাহিদা বাড়ে।
মাহাদি হাসান নামে একজন ক্রেতা বলেন, সামনে ঈদ তাই আতর কিনতে এসেছি। শুনেছি এই দোকানে ভালো মানের আতর পাওয়া যায়। এখানে এসে দেখি ইসলামী অনেক পণ্য এক ছাদের নিচে। ঈদের কেনাকাটার অধিকাংশ পণ্য এখান থেকে ক্রয় করতে পারছি।
জমজম প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারি মাহফিজুর রহমান বলেন, শুধু ঈদ সামনে রেখে না, এই প্রতিষ্ঠানে সারাবছর ইসলামী পণ্য বিক্রি করা হবে। আমরা নতুন করে যাত্রা শুরু করেছি। আশা করি শহরের কোথাও এমন নাম করা দেশি-বিদেশি আতর বা ইসলামী পণ্য এক দোকানে পাওয়া যায় না। অনেক দূর থেকে মানুষ পণ্য ক্রয় করতে আসছে। মাদরাসা, হাফিজিয়া মাদরাসার ছাত্ররা নিয়মিত আসেন। সাধারণত সুগন্ধি, টুপি, জায়নামাজ ঈদ শুরুর সপ্তাহ খানেক আগে শুরু হয়। আশা করা যায় এবার ঈদে বিক্রি ভালো হবে।