বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের ঝিকরগাছার বাসিন্দা মালেশিয়া প্রবাসী কামরুজ্জামান মিন্টু ও সৌদি প্রবাসী মাহবুব আলম রিপন বিদেশে থেকেও বিস্ফোরক আইনের মামলার আসামি হয়েছেন। বাদির দাবি, গত ১৭ ডিসেম্বর বিকেল ৫টার দিকে ঝিকরগাছা উপজেলার জয়কৃষ্ণপুর জামতলা মোড় নামক স্থানে আসামিরা দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যান। এসময় বাদি তাদের চিনতে পারেন। তবে মিন্টু ও রিপনের স্বজনদের দাবি, ১৭ অক্টোবর থেকে মালেশিয়ায় অবস্থান করছেন কামরুজ্জামান মিন্টু। আর রিপন সৌদি আরব গেছেন ৮ নভেম্বর। ওইদিন থেকে তারা সেখানেই আছেন। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্য তাদের ফাঁসানো হয়েছে। শুধু মিন্টু কিংবা রিপন নয়, ওই মামলায় সাংবাদিক, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ ৩৭জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০জনকে আসামি করা হয়েছে। গত ১৭ ডিসেম্বর অর্ন্তর্বতী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ঝিকরগাছা থানায় এ মামলা দায়ের করেন উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের হযরত আলীর ছেলে ও জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সোলাইমান হোসেন।
জানা যায়, মামলার ১৬ নম্বর আসামি মালেশিয়া প্রবাসী ঝিকরগাছার উপজেলার কৃত্তিপুর গ্রামের শফি বিশ্বাসের ছেলে কামরুজ্জামান মিন্টু। তিনি গত ১৭ অক্টোবর মালেশিয়া গেছেন। বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন। মামলার ৩২ নম্বর আসামি করা হয়েছে ঝিকরগাছার ঝাউদিয়া গ্রামের কাশেমের ছেলে সৌদি প্রবাসী রিপনকে। যদিও তার পুরো নাম মাহবুব আলম রিপন। এজাহারে তার নাম শুধু রিপন লেখা হয়েছে। তিনি গত ৮ নভেম্বর সৌদি আরবে যান। বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন। তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এদিকে, বাদি এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ১৭ ডিসেম্বর বিকেল ৫ টা ৫ মিনিটের দিকে ঝিকরগাছা বাজারে প্রয়োজনীয় কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ঝিকরগাছার জয়কৃষ্ণপুর জামতলা মোড় নামক স্থানে আসামিদের সমাগম দেখতে পান। এ সময় সাক্ষীদের ফোনে ডেকে নিয়ে স্থানীয় লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তখন আসামিরা তাদের লক্ষ্য করে দুটি ককটেল নিক্ষেপ করে। ওই ককটেল বিস্ফোরণে বিকট শব্দে জনমনে আতংক সৃষ্টি হয়। তখন আসামিরা দিকবিদিক ছুটাছুটি করে পালিয়ে যায়। দিনের আলোয় বাদিসহ উপস্থিত লোকজন আসামিদের চিনতে পারেন।
মামলার আসামি কামরুজ্জামান মিন্টুর বাবা শফি বিশ্বাস বলেন, ‘আমার ছেলের নামে রাজনীতিক উদ্দেশ্যমূলকভাবে মামলা দেওয়া হয়েছে। মামলার এজাহারের যে সময় উল্লেখ করা হয়েছে; সেই সময়ে আমার ছেলে মালেশিয়াতে অবস্থান করছে। সে ১৭ অক্টোবর মালেশিয়াতে যায়। ছেলে যুবলীগের রাজনীতি করলেও এলাকায় দলবল নির্বিশেষে সবার কাছে জনপ্রিয় ব্যক্তি ছিলেন।’
এ বিষয়ে জানতে মামলার বাদি সোলাইমান হোসেনের মোবাইল ফোনে কল দিলে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলুর রহমান খান বলেন, ‘মামলার কোন আসামি যদি ঘটনার সময় বিদেশে অবস্থান করেন। তদন্তসাপেক্ষে সত্যতা পেলে তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে।’ আর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাবেরুল হক সাবু বলেন, ‘কোন উদ্দেশ্যমূলকভাবে কেউ যাতে কোন মামলা না করে; সেটা দলীয় ভাবে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। যদি মামলার আসামীরা ঘটনাস্থলে না থাকে বা বিদেশ থাকে তাহলে আদালতে প্রমাণিত হলে মামলা ঠিকবে না। বিএনপি আওয়ামী লীগের মতো ঢালাও মামলার আসামি করাতে বিশ্বাসী না।’