বাংলার ভোর প্রতিবেদক
দায়িত্বশীল ও মূল্যবোধ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে এগিয়ে যাবে দৈনিক বাংলার ভোর। নানা সংকটের মধ্যেও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা চর্চার মাধ্যমে পাঠকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠুক পত্রিকাটি। বৃহস্পতিবার বাংলার ভোর পত্রিকার প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এমন প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করেছেন অতিথিবৃন্দ। দিনটি উদযাপনে শহরের পৌর কমিউনিটি সেন্টারে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত, আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও কেক কাটা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে পত্রিকাটির জন্মদিন উদযাপন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন রাজনীতিক, সাংবাদিক, প্রশাসনিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং বাংলার ভোরের পরিবারের সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউট (পিআইবি) পরিচালক পারভীন সুলতানা রাব্বী বলেন, আমরা বিগত দিনে ব্যক্তি পূজা করেছি। নিজের দায়িত্ব পালন করিনি। আমাদের প্রত্যাশা, আমরা যেন নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারি। গণমাধ্যম যদি শক্তিশালী থাকে, তাহলে সব ধরনের অন্যায় অনিয়ম দমন করা যায়। সাংবাদিকদের অনুকূল পরিবেশ থাকে না। সব পরিবেশে সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহ করতে হয়, সংবাদ পরিবেশন করতে হয়। সমাজে আইনের ব্যত্যয় হলে সংবাদ হয়। তিনি আরও বলেন, পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। আঞ্চলিক পত্রিকায় যারা কাজ করেন তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ হতে হবে। গণমাধ্যমের মালিকানা সাংবাদিকদের হাতেই থাকতে হবে। একজন সাংবাদিকের পত্রিকার মালিক হিসেবে ডিক্লিয়ারেশন পেতে অনেক বেগ পেতে হয়। যা কর্পোরেট মালিকদের ক্ষেত্রে হয় না। তাই বলব, গণমাধ্যমের মালিকানা সাংবাদিকদের হাতে থাকলে, সাংবাদিকতার বিকাশ হবে। একজন সাংবাদিক হিসেবে বাংলার ভোর পত্রিকার অনুমোদন পেতে প্রকাশককে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। যার সাক্ষী আমি। বাংলার ভোর পথচলায় আমি পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলাম। বাংলার ভোর, স্বচ্ছ, স্পষ্ট, উজ্জ্বল সাংবাদিকতার বিকাশ ঘটাবে, যশোরে পেশাদার পত্রিকার মত ভূমিকা রাখবে, এই প্রত্যাশা করি।
পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ আবুল কালাম শামছুদ্দীন জ্যোতির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন। তিনি বলেন, বাংলার ভোর পত্রিকার কর্মীরা উৎফুল্লতার সাথে কাজ করছে। বাংলার ভোর তরুণদের নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করি পাঠকের মাঝে আগামিতে আরও বেশি সমাদৃত হবে পত্রিকাটি।
দৈনিক কল্যাণ সম্পাদক একরাম উদ দ্দৌলা বলেন, বাংলার ভোরের প্রকাশক ও সম্পাদক জ্যোতি ও তার পিতা আমার দীর্ঘদিনের সাথি। সংবাদপত্র জগতে যখন দুঃসময়, তখন বাংলার ভোরের যাত্রা। বাংলার ভোর দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার সাক্ষর রেখেছে। যশোর বিনির্মাণে বাংলার ভোরের ভূমিকা আছে আগামীতেও থাকবে। এই পত্রিকা সমাজের অসংগতি তুলে ধরে আগামীতে পাঠক নন্দিত হবে এই আশা প্রত্যাশা করছি।
প্রেসক্লাব যশোরের সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদুর রহমান বলেন, বাংলার ভোরে যারা কাজ করে তারা পেশাদার সংবাদকর্মী। বাংলার ভোরে যারা কাজ করে তারা যে চুক্তিতে ডেস্কে কাজ করে তারা নিয়মিত বেতন পেয়ে যাচ্ছেন এটিও একটা বড় পাওয়া। বাংলার ভোরের অগ্রযাত্রা কামনা করি। বাংলার ভোর এগিয়ে গেলে আমাদের স্বজনরাও এগিয়ে যাবে সেই প্রত্যাশা করি।
দৈনিক সমাজের কথার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আমিনুর রহমান মামুন বলেন, বাংলার ভোর পত্রিকার নামকরণ সার্থক। বাংলার ভোরের কাছে সংবাদপত্রসেবি হিসেবে আমরাও প্রত্যাশা করি একটি সুন্দর দিনের স্বপ্ন যেন আমরা এই পত্রিকার পাতায় দেখতে পাই। বাংলার ভোরের যাত্রা যখন শুরু হয়েছিলো তখন আমার ভিতরে সংশয় কাজ করেছিল এই পত্রিকাটি কতদূর আগাতে পারবে। দেশের অর্থনৈতিক সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে এমন ভাবনা ছিলো। একজন নবীন সম্পাদক একদল নবীন সংবাদপত্রসেবী নিয়ে এই পত্রিকা কতদুর নিয়ে যাবে এই সংশয় ছিলো। সেই শংকা কাটিয়ে পত্রিকাটি একটি বছর অতিক্রম করলো এটা একটি ভালো দিক। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই পত্রিকা পরিবারের সাথে যারা জড়িত সবার সাফল্য ও শুভকামনা জানাচ্ছি।
দৈনিক রানার’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কবিরুল হক দিপু বলেন, বাংলাদেশের পত্রিকা জগতে অনেক নতুন পত্রিকা খুব অল্প সময় মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে। আগামীতে বাংলার ভোর আরও দৃপ্ত পায়ে এগিয়ে চলুক এই কামনা করি। আমি কর্তৃপক্ষকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আগামীর পথ চলায় আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশের সামাজিক এবং অন্যন্য সমস্যা পত্রিকায় লেখনির মাধ্যমে ফুঁটিয়ে তুলবো এই কামনা করছি।
সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও আইডিয়া সমাজ কল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা হামিদুল হক শাহিন বলেন, বাংলায় চমৎকার একটা ভোর দরকার। বাংলায় একটা ভোর সূচিত হয়েছে। এই ভোরকে যদি আমরা চমৎকার একটা দিনে রুপান্তর করতে পারি তাহলে আসলে বাংলা প্রকৃত অর্থে সোনার বাংলা হয়ে যাবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমাদের যেসব গণমাধ্যমকর্মীরা রয়েছে তারা যেভাবে পারস্পরিক সহযোগিতার মানসিকতা নিয়ে চলেন তা আমাদের আপ্লুত করে। এক বছরে একটা পত্রিকা মূল্যায়ন করা সহজ না। গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যকার মূল বিষয় হলো মূল্যবোধ নিরপেক্ষতা। আমার মনে হয় বাংলার ভোর পত্রিকা তৃতীয় চোখ দিয়ে দেখে সমাজের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরতে সক্ষম। আমি বাংলার ভোরের উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করি।
বাংলার ভোর’র উপদেষ্টা সম্পাদক হারুন আর রশিদ বলেন, সংবাদপত্র এখন সহজ বিষয় না। এখন ইলেকট্রনিক প্রযুক্তির যুগে সংবাদপত্র এগিয়ে নেয়া জটিল। বাংলার ভোর এই কষ্টের চিন্তা করে কাজ শুরু করেছে। বাংলার ভোর বিশ্বাস করে সমাজকে এগিয়ে নিতে সমাজের অসংগতি ও সম্ভাবনা তুলে ধরতে হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ আবুল কালাম শামছুদ্দীন জ্যোতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এক বছর আগে বাংলার ভোর পত্রিকার যাত্রা শুরু হয়। এই পত্রিকা নিয়ে আমাদের স্বপ্ন অনেক। আমরা চেষ্টা করছি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে সমাজের অসংগতি তুলে ধরার। আমাদের এই পথ চলায় আমাদের পাঠক, শুভাকাক্সিক্ষ, প্রবীণ সাংবাদিকদের অনুপ্রেরণা, পরামর্শ একান্ত কাম্য। অতীতের মত আপনারা সব সময় বাংলার ভোর পরিবারের পাশে থাকবেন এমনটা প্রত্যাশা করি। সুধীজনদের শুভ কামনা ও প্রত্যাশায় বাংলার ভোর মা, মাটি ও মানুষকে ভালোবেসে সাহসী পথচলা অব্যাহত রাখবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করে তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলার ভোর’র সম্পাদক (মানব সম্পদ) আব্দুল ওহাব মুকুল, যশোর জেলা ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এম আর খান মিলন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক গ্রামের কাগজের সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিন, প্রবীণ সাংবাদিক বীরমুক্তিযোদ্ধা রুকুনউদ্দৌলাহ, প্রেসক্লাবের সাবেক সহসভাপতি নূর ইসলাম, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনোতোষ বসু, সাধারণ সম্পাদক এইচআর তুহিন, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সাধারণ সম্পাদক এসএম ফরহাদ, যশোর জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মোর্শেদ আলম,¬ দৈনিক সত্যপাঠের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন আলম, জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার সাজেদ রহমান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের স্টাফ রিপোর্টার সাইফুল ইসলাম সজল, দৈনিক স্পন্দনের বার্তা সম্পাদক মিজানুর রহমান, দৈনিক সমাজের কথার বার্তা সম্পাদক মিলন রহমান, সময় টিভির স্টাফ রিপোর্টার জুয়েল মৃধা, পাক্ষিক যশোরের কাগজের সম্পাদক রাকিবুল আলম। অনুষ্ঠানে দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা আবদুল কাদের।অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক ইন্দ্রজিৎ রায়।