বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের মনিরামপুরের নেহালপুর ইউনিয়ন ভূমি দপ্তরের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) বিষ্ণুপদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে জমির নামজারিতে সরকারি খরচের চেয়ে বাড়তি টাকা নিয়ে সেবার নামে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ বহু পুরোনো। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রাহকদের আনা অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার দুপুরে থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত নেহালপুর ভূমি দপ্তরে সরেজমিন অভিযান চালিয়েছে দুদক যশোর কার্যালয়ের তিন সদস্যর একটি দল। দুদকের যশোর দপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আল আমিনের নেতৃত্বে চলে এই অভিযান।
অভিযান শেষে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন, দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আল আমিন। তিনি বলেন, দুদকের প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে আজ বুধবার আমরা আকস্মিক নেহালপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অভিযান চালিয়েছি। অভিযান চলাকালে স্থানীয় আব্দুল খালেক নামে এক সেবাগ্রহীতা অভিযোগ করেন, নায়েব বিষ্ণুপদ তার কাছ থেকে নামজারির নাম করে কয়েক মাস আগে চার হাজার টাকা নিয়েছে। নায়েব এখনো তার কাজটা করে দেয়নি। অভিযোগকারী নায়েব বিষ্ণুপদর সামনে আমাদের লিখিত দিয়েছেন।
আল-আমিন বলেন, আমরা অভিযানে ভূমি অফিসে অনেক সেবাগ্রহীতার সাথে কথা বলেছি। তারা অভিযোগ করেছেন, নেহালপুর ভূমি অফিসে সেবা নিতে এসে গ্রাহক হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এই দপ্তরে জমির কাগজপত্র দেখাতে গেলে টাকা দিতে হয়। নামজারিতে নায়েব বাড়তি টাকা নিয়ে কাজ না করে দিয়ে গ্রাহক হয়রানি করছে।
আল আমিন বলেন, আমরা উপস্থিত কাউকে সাজার আওতায় আনিনি। আমরা নায়েব বিষ্ণুপদর বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগগুলো ঢাকা হেড অফিসে লিখিত আকারে জানাব।
জানা গেছে, নামজারির জন্য জমির মালিকপক্ষ এসিল্যাণ্ড বরাবর আবেদন করার পর এক হাজার ১০০ টাকা সরকারি খরচ বিকাশে জমা দিয়ে গ্রাহক জমির নামজারি করাতে পারবেন। এইক্ষেত্রে এসিল্যাণ্ডের চাহিদা মাফিক নায়েব একটি প্রতিবেদন দাখিল করবেন। নায়েব সরাসরি নামজারির আবেদনের জন্য কোন দায়িত্ব বা টাকা হাতে নিতে পারবেন না।
অভিযোগ রয়েছে, নেহালপুর ইউনিয়ন ভূমি দপ্তরের নায়েব বিষ্ণুপদ সেবাগ্রহীতাকে এসিল্যাণ্ডের দপ্তরে না পাঠিয়ে নিজেই নামজারি করে দেয়ার কথা বলে দলিলপ্রতি চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা নেন। এছাড়া বাড়তি টাকা নিয়ে গ্রাহককে কাজ করে না দিয়ে মাসের পর মাস হয়রানির অভিযোগও রয়েছে এই নায়েবের বিরুদ্ধে।
অভিযোগের বিষয়ে নেহালপুর ভূমি অফিসের নায়েব বিষ্ণুপদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগের উপর ভিত্তি করে দুদকের তদন্ত হয়েছে। আমি কারও কাছ থেকে নামজারির কথা বলে বাড়তি টাকা নিইনা। আমার দপ্তরে কোন ঘুষের কাজ চলে না।
মণিরামপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়াজ মাখদুম বলেন, দুদকের নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে একটি প্রতিনিধি দল আজ নেহালপুর ভূমি অফিসে এসেছেন। তারা আমাকে জানিয়েছেন, সেখানে ৩-৪ জন বাইরের লোক কাজ করে। আমি এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।
এক প্রশ্নের জবাবে এসিল্যাণ্ড বলেন, জমির নামজারিতে টাকা বেশি নেয়ার বিষয়ে দুদকের প্রতিনিধি দল আমাকে কিছু জানায়নি। তারা দাখিলা সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে তদন্ত করেছে বলে আমাকে জানিয়েছে।