নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর সাহিত্য পরিষদের নিজস্ব কার্যালয় পুনরম্নদ্ধারের একাট্টা হচ্ছে পরিষদ নেতৃবৃন্দসহ কবি, সাহিত্যিকরা। এ লক্ষে সোমবার জেলা প্রশাসক এবং জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করে কার্যালয়ে পুনঃপ্রবেশ ও সাহিত্য চর্চাসহ সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। শনিবার বিকেলে এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধাšত্ম গ্রহণ করা হয়। জেলার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান যশোর সাহিত্য পরিষদ কার্যালয় পুনরম্নদ্ধার সংক্রান্ত এ মতবিনিময় সভা যশোর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পরিষদ সভাপতি অধ্যক্ষ শাহীন ইকবালের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় মতামত ব্যক্ত করেন প্রেস ক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সাধারণ সম্পাদক এস এম তৌহিদুর রহমান, গ্রামের কাগজ সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিন, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান বুলু, সংস্কৃতিজন হারম্নন অর রশিদ, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী টুলু, অধ্যক্ষ মো¯ত্মাক হোসেন শিম্বা, বিশিষ্ট সাংবাদিক সাজেদ রহমান, প্রণব দাস, সাহিত্যিক মামুন আজাদ, বিবর্তন যশোরের সাধারণ সম্পাদক নওরোজ আলম খান চপল, চারম্নপীঠ যশোরের সাধারণ সম্পাদক মামুন অর রশিদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করে কবি কাজী মাজেদ নওয়াজ। মতবিনিময়ের শুরম্নতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন এবং পরিষদের আদ্যোপাšত্ম তুলে ধরেন তিনি। কাজী মাজেদ নওয়াজ বলেন, দীর্ঘ ৪১ বছর যশোর সাহিত্য পরিষদ-দেশের সাহিত্য সংস্কৃতি উন্নয়নে কাজ করছে।
১৯৮৩ সালে যশোরের জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ এবং যশোরের সাহিত্যানুরাগী ব্যক্তিদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ৫০ দশকের অন্যতম প্রধান কবি আজীজুল হকের নেতৃত্বে যশোর সাহিত্য পরিষদ তার কার্যক্রম শুরম্ন করে। সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিকাশে জেলা পরিষদ- শহরের মুজিব সড়কে একটি কক্ষ তৈরি করে যশোর সাহিত্য পরিষদকে মাসিক ভাড়ায় বরাদ্দ দেন। ১৯৯২ সালে যশোর জেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের নির্দেশে উলিস্নখিত ভবনের দোতলায় যশোর সাহিত্য পরিষদ কার্যালয় স্থানাšত্মর হলে সেখান থেকেই সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করা হচ্ছিলো।
কাজী মাজেদ নওয়াজ আরও বলেন, বিগত ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখ বেলা ১১টায় আকস্মিকভাবেই বুলডোজার দিয়ে রা¯ত্মা প্রশ¯ত্ম করার কথা বলে যশোর সাহিত্য পরিষদ কার্যালয় অবস্থিত ভবনের একটি অংশ বিনা নোটিশে ভেঙে ফেলা হয়। এর ফলে যশোর সাহিত্য পরিষদ অদ্যাবধি কার্যত উদ্বাস্তু হয়ে আছে। এ পরিস্থিতিতে বিনা নোটিশে যশোর সাহিত্য পরিষদকে রা¯ত্মায় এনে দাঁড় করানোর জন্য আমরা যশোরের সকল সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান সম্মিলিতিভাবে ইতোপূর্বে তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে ভবনটি মেরামত করে এ ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ড অব্যাহত রাখার ব্যবস্থা গ্রহণের আকুতি জানিয়ে যশোরের সকল সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে সাথে নিয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে লিখিত ও মৌখিকভাবে অবগত করি। এছাড়াও এ ঘটনার পরবর্তীতে তৎকালীন স্থানীয় সরকার, পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী যশোর সাহিত্য পরিষদ কার্যালয় পরিদর্শন করেন এবং পরিষদ কার্যালয় পুনরম্নদ্ধারের আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, জাতীয় ও আšত্মর্জাতিক পর্যায়ে খ্যাতিমান অনেক লেখকের ভিত্তিভূমি যশোর সাহিত্য পরিষদ, যা যশোরকে এক অনন্য উচ্চতায় আসীন করেছে। এদের প্রায় সকলেরই ইতোমধ্যে একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে এবং সাহিত্যকর্মের জন্যে জাতীয় ও আšত্মর্জাতিক স্বীকৃতিও পেয়েছেন কেউ কেউ। জেলা শহরের একটি প্রতিষ্ঠানে সাহিত্য চর্চা করে এত বেশি সংখ্যক মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠিত কবি/লেখক সৃষ্টির দাবিদার কেবল যশোরই হতে পারে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যশোর সাহিত্য পরিষদ- সাহিত্য সম্মেলন, সাহিত্য পুরস্কার প্রদান এবং দেশ-বিদেশের প্রথিতযশা কৃতী সাহিত্যিক, কবি ও শিল্পীদের সমাবেশ ঘটিয়ে গৌরবময় সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কৃতিত্বের অধিকারী, যা বিভিন্ন সময়ে গৌরবান্বিত করেছে যশোরকে। কার্যালয়বিহীন অবস্থায়ও বিগত বছরগুলোতেও আমরা বাংলা সাহিত্যের গুণী কবি- লেখকের সমাবেশ ঘটিয়ে যশোরে মানসম্পন্ন সাহিত্য অনুষ্ঠান সফলতার সাথে সম্পন্ন করেছি। মতবিনিময় সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, অবৈধভাবেই সাহিত্য পরিষদ কার্যালয় উচ্ছেদ করা হয়েছিল। এবার সকলকে অবহিত করে কার্যালয়টি উদ্ধার করে সাহিত্য চর্চা।