বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর শহরের শংকরপুর এলাকার ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম হত্যা মামলায় রিপন আহমেদকে ফাঁসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন রিপনের স্ত্রী শাহনাজ পারভীন আসমা।
লিখিত বক্তব্যে শাহনাজ পারভীন আসমা বলেন, আমার স্বামী রিপন একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। কয়েক মাস আগে কোম্পানির চাকরি ছেড়ে ইন্ডিয়ান ল্যাগেজের ব্যবসা শুরু করেন। এই ব্যবসার মাধ্যমে শংকরপুর এলাকার আরেক ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলামের সাথে পরিচয় হয়। তারা দুই জন একসাথে ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসায় লোকসানের কারণে দুইজনই পুঁজি হারায়। পরে মোমিন নামে এক ব্যক্তিকে দিয়ে রেজাউল ঋণ উত্তোলন করেন। কিন্তু সেই লোনের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হন রেজাউল। ফলে তিনি বাড়ি বিক্রি করে ঋণের টাকা পরিশোধ করেন।
তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী রিপন প্রায় এক থেকে দেড় বছর আগে থেকেই বেনাপোল চলে যায়। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি থেকে স্ব পরিবারে বেনাপোলে গিয়ে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছি। ব্যবসায় লোকসান হওয়ার পর থেকে রিপন ও রেজাউল এক সাথে চলাফেরা বন্ধ করে দেয়। তবে মাঝে-মধ্যে সবুজ নামে একজনের মোটরসাইকেলে করে রেজাউল বেনাপোলে গিয়ে রিপনের কাছ থেকে খাদ্য সামগ্রীসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে আসতেন। যাতায়াতের মধ্যে সবুজের সাথে রিপনের পরিচয় হয়।
বেনাপোলে ব্যবসায় লাভবান না হওয়ায় রিপন রবি’ সীম কোম্পানিতে চাকরি শুরু করেন। এরই মধ্যে একদিন আমাদের মোবাইলে ফোন করে রেজাউলের স্বজনরা তার খোঁজখবর নেয়। তখন সন্ধান জানিনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলাম। তারপরও রেজাউলের স্ত্রী মমতাজ বেগম যশোর কোতোয়ালি থানায় রিপনকে সন্দেহ করে জিডি করেন। রিপন ষড়যন্ত্রের বিষয়টি বুঝতে পেরে গত ২৫ মার্চ থানায় পাল্টা জিডি করেন। ২৮ মার্চ এস আই চঞ্চল কুমার বিশ্বাস আমাদেরকে থানায় ডেকে নেন। ফলে সেদিন আমরা যশোরে অবস্থান করি। আর ঈদের তৃতীয় দিন আমার যশোরে বাবার বাড়ি বেড়াতে এসে পরেরদিন বেনাপোল ফিরে গিয়েছিলাম।
শাহনাজ পারভীন আসমা আরও বলেন, এর আগে রেজাউল নিখোঁজের ঘটনায় আমার স্বামীর নামে জিডি করার দুইদিন পরে এসআই চঞ্চল কুমার বিশ্বাস আমাদের থানায় ডেকে নেন। সেখানে আমার স্বামীর মোবাইলের কল রেকর্ড দেখেন। কিন্তু সেখানে রিপনের কোন সংশ্লিষ্টতা না পেয়ে দারোগা বলেছিলেন রিপনকে ফাঁসানো হচ্ছে। গত ২৬ এপ্রিল আবারও ওই দারোগা আমার স্বামীকে আবারও থানায় ডাকেন। আমরা থানায় গেলে পুলিশ আমার স্বামীকে আাটকে রেখে আমাদের চলে আসতে বলেন। পরবর্তীতে জানতে পারি আমার স্বামী রিপনকে রেজাউল হত্যার মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। স্বামীকে মিথ্যা মামলা থেকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শাহনাজ পারভীন আসমা। সংবাদ সম্মেলনে রিপনের মা ছলে বেগম, মুজিবর রহমান, রিপনের শিশু সন্তান আফানসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোতয়ালী থানার ওসি আবুল হাসনাত বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে আসামিদের আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। এ জন্য তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নেয়া হয়েছে।