শার্শা সংবাদদাতা
বেনাপোলে একটি নারী চক্র ফাঁদ পেতে ব্যবসায়ী ও সম্পদশালী ব্যক্তিদের ব্লাকমেইল করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এলাকার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও সম্পদশালী ব্যক্তিদের টার্গেট করে তাদের মোবাইল নাম্বার ম্যানেজ করে জরুরি প্রয়োজনের কথা বলার নাম করে পূর্বপরিকল্পিত স্থানে ডেকে ফাঁসিয়ে লাখ লাখ টাকা অর্থ আদায় করছে বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বেনাপোল বন্দর এলাকায় ভয়ঙ্কর এই নারী চক্রের নেত্রী তাছলিমা ওরফে পলি। সে বেনাপোল পাঠবাড়ী এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আঃ জব্বার এর বাড়ির ভাড়াটিয়া। এবং শার্শা কণ্যাদহ গ্রামের আব্দুল মালেকের কণ্যা।
বেনাপোল পোর্ট থানার একটি অভিযোগ সূত্র থেকে জানা যায়, বেনাপোল গ্রামের ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী মহাসিনকে গত ৮ মে ০১৭২৭-৩৬১৩৪২ একটি মোবাইল নাম্বার থেকে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ফোন দিয়ে সাথী নামের একটি মেয়ে জরুরি প্রয়োজনের কথা বলে বলফিল্ড বিয়ে বাড়ির পাশে ডাকে। আমি সরল বিশ্বাসে আমার স্ত্রী ও কাজের মেয়ে সহ সেখানে পৌছালে আমার স্ত্রীকে দেখে বলে কে আপনি আমার স্ত্রী তখন বলে ভাইকে চেনো আর ভাবিকে চেনো না।
এ সময় সাথী নামধারী মেয়েটি বিভিন্ন অশালীন কথাবার্তা বলতে থাকে। সে সময় অজ্ঞাতনামা কয়েকজন ছেলে এসে আমার কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। তখন আমার চিৎকারে ওই যুবকরা পালিয়ে যায়। তবে সেখানে থাকা একজন মেয়েটিকে পলি বলে ডাক দেয়। আমি তার নাম ঠিকানা সংগ্রহের চেষ্টা করি ঠিকানা না পেয়ে এই চক্রেরদ্বারা আমার সম্মানহানী সহ অন্য কোন উপায়ে আমাকে ফাঁসিয়ে টাকা আদায় করতে পারে বলে আমি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।
আরেক ভুক্তভোগী বাবুল জানায়, বেনাপোল বলফিল্ড এলাকার ভাড়াটিয়া পলি গত মার্চ মাস থেকে ০১৭২৭-৩৬১৩৪২ নাম্বার থেকে ভালোবাসার প্রলোভনে বেনাপোল দুর্গাপুর রফিকুলের বাড়ির পাশে একটি বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে পূর্বপরিকল্পিত আগে থেকে পলি চক্রের ৪জন সদস্য বাড়ির পাশে লুকিয়ে থাকে। আমি ওই বাড়ির ঘরের মধ্যে ঢুকলে পলি আমাকে জড়িয়ে ধরে এসময় চক্রের সদস্য স্বপন, নজরুল, ফরহাদ, জোসনা মিলে আমার কাছে ৩ লাখ টাকা দাবি করে।
আমি টাকা দিতে না চাইলে আমাকে মার ধরসহ অপৃত্তিকর ছবি তুলে ভয়ভীতি দিতে থাকে। আমি মানসম্মানের ভয়ে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হই। কিন্তু এ ঘটনার পরও পলি চক্রের সদস্যরা আমাকে বিভিন্ন ভাবে ব্লাকমেইল করতে থাকে। এছাড়া পলি পুলিশেরও ভয় দেখায়। পরে কোন কুলকিনারা না পেয়ে আমার ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও দিঘীরপাড় ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজিম উদ্দিন গাজীকে জানাই।
এ বিষয়ে বেনাপোল ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান জানান, পলি নামে ওই মেয়ে আমার এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও সম্পদশালী ব্যাক্তিদের টার্গেট করে তাদের বাড়িতে ডেকে ব্লাকমেইল করছে। আমার কাছে এই চক্রের ৩টি অভিযোগ এসেছে। বাপ্পী নামের গাড়িচালকের কাছ থেকে ৩০ হাজার, মহাসিনের কাছ থেকে ৫০ হাজার আর বাবুল নামে গাজিপুরের একটি ছেলের কাছ থেকে জোর পূর্বক এক লাখ ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এ বিষয়ে দিঘীরপাড় ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজিম উদ্দীন গাজী জানান, পলি আমার এলাকায় বাসাভাড়া থাকতো সে মাদকসহ অনৈতিক কর্মকান্ড করে বলে আমার এলাকা থেকে বিতাড়িত করেছি। আমার দুই জন ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ব্লাকমেইল করে প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়েছে। অতিদ্রুত এই পলি চক্রের সকলকে আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের কাছে বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করছি।