সুমন ব্রহ্ম, ডুমুরিয়া থেকে
ডুমুরিয়া উপজেলা অংশের বিল ডাকাতিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সোয়া তিন হাজার হেক্টর জমির ৮ হাজার ২৫০ টি মাছের ঘের, ক্ষেতের ফসল, কয়েক হাজার বসত বাড়ি, রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিল ডাকাতিয়ার প্রান্তিক মাছ চাষীরা। ঘেরের মাছ ভেসে যাওয়ায় কপাল পুড়েছে বিল ডাকাতিয়ার মাছ চাষীদের।
ডাকাতিয়া বিলের মাছ চাষীরা বলেন এ বছর বিল ডাকাতিয়ায় আমরা যারা মাছ চাষি আছি তারা আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পরবো না।
আমাদের অনেকের রয়েছে শত শত হেক্টর মৎস্য ঘের। অধিকাংশ ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে দুই একজনের দুই একটি ঘের কোন রকমে জেগে আছে তাও সেটা নেট দিয়ে রক্ষার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। শত কোটি টাকার উপরে মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এলাকার মাছ চাষীরা সবাই দুশ্চিন্তায় আছে। কিভাবে এ ক্ষতি পূরণ হবে? সরকারিভাবে কোন সাহায্য সহযোগিতা তো দূরে থাক, আমাদের খোঁজ খবরও কেউ নেয় না।
ডুমুরিয়া উপজেলার সিনিয়র মৎস্য অফিসার আবুবকর সিদ্দিকী বলেন, টানা কয়েকদিনের ভারি বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় ডুমুরিয়া উপজেলার অন্তর্গত বিল ডাকাতিয়ার ৩ হাজার ৩৬ হেক্টর জমির সাড়ে ৭ হাজার মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিতে ভেসে গেছে ঘেরের মূল্যবান চিংড়ি এবং সাদা মাছ। বিল ডাকাতিয়ার ডুমুরিয়া অংশে সব মিলিয়ে মৎস্য খাতে ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৫০ কোটি টাকা।
একই উপজেলার কৃষি অফিসার ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, কয়েকদিনের টানা ভারি বর্ষণে বিল ডাকাতিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কৃষি নির্ভর ডুমুরিয়া উপজেলার বিল ডাকাতিয়া অধুষ্যিত রংপুর, গুটুদিয়া, রঘুনাথপুর, ধামালিয়া ইউনিয়নের ধান এবং সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে গ্রীস্মকালীন টমেটোর ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
সব মিলিয়ে ডুমুরিয়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের বিল ডাকাতিয়া অংশে কৃষি খাতে ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৩৫ কোটি টাকার মতো। তিনি বলেন, প্রান্তিক কৃষকদের একটাই দাবি আমাদের ক্ষেতের পানি সরানোর ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু উপজেলা পর্যায়ে সরকারিভাবে কৃষি অফিসে কোন সেচ যন্ত্র সরবরাহ নেই। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) কৃষকদের সেচ ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করে। কিন্তু উপজেলা পর্যায়ে তাদের কোন অফিস নেই।
তিনি আরোও বলেন, উপজেলা পর্যায়ে বিএডিসি’র কার্যক্রম থাকলে প্রান্তিক কৃষকরা আরো উপকৃত হতেন। সেচের ব্যবস্থা করতে না পারলেও আমরা প্রান্তিক কৃষকদের ক্ষেতের পানি সরে যাওয়ার পর করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান করছি।