শ্রীপুর (মাগুরা) সংবাদদাতা
শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্বেও শক্ত মনোবলের সালমা খাতুনের মুখের হাঁসি দেখে বোঝার উপায় নেই যে তিনি শারীরিকভাবে খ্বুই অসুস্থ।
স্থানীয় বাজারে মুদি দোকান দিয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধীত্ব জয় করে প্রায় ১৫ বছর ধরে বৃদ্ধ মা বাবাসহ তিন জনের সংসার চালান সালমা।
হুইল চেয়ারে করে সালমার মা তাকে বাজারে তার দোকানে দিয়ে আসলেও এখন তার অসুস্থতার কারণে সালমার বাবাই থাকে বাজারে দোকানে দিয়ে আসেন এবং রাতে নিয়ে আসেন।
সালমা খাতুন জানান, তার নিজের চিকিৎসা ছাড়াও আছে অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা খরচ, যা তার এই ছোট মুদি দোকানের স্বল্প আয় থেকে করা সম্ভব না। সরকারের দেয়া প্রতিবন্ধী ভাতা ছাড়া অন্য কোন সহায়তাও তিনি পাননি।
সালমা খাতুন আরো জানান, ভাতাটাও কয়েক মাস বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন তিনি।
সালমা খাতুন শ্রীপুর উপজেলার ২নং আমলসার ইউনিয়নের বাজার সংলগ্ন দরিদ্র কৃষক সোহবার হোসেন ও মনোয়ারা বেগমের মেয়ে।
প্রতিবন্ধীতার সাথে প্রায় দেড় বছর ধরে কিডনি রোগে ভুগছেন সালমা খাতুন। ডাক্তার অপারেশনের কথা বললেও টাকার কারণে সেটাও করতে পারছেন না। এমনকি কিডনি রোগ চিকিৎসায় সরকারি অনুদানের চেষ্টা করেও হয়েছেন ব্যর্থ।
দুই ভাই বোনের মধ্যে সালমা ছোট। প্রায় ত্রিশ বছর আগে সাড়ে বছর বয়সী সালমা জ¦রে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসায় সুস্থতা পেলেও কোমরের নিচ থেকে দুই পা ও একটি হাত অবস হয়ে যায় তার। সেই থেকেই সালমার জীবন যুদ্ধ শুরু। মানসিক জোরে বলিয়ান সালমা ভর্তি হন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ধীরে ধীরে ওঠেন দশ শ্রেণীতে। কিন্তু আর্থিক সংকটে দিতে পারেননি এসএসসি পরীক্ষা। এ পর্যায়ে পরিবারের অর্থ সহায়তার লক্ষ্যে বাজারে দেন ছোট্ট মুদি দোকান। সেখান থেকে যা আসে তাই দিয়ে চলে তিনজনের সংসারের খরচ। ইদানিং নতুন করে কিডনি রোগের কারণে পারেননা ঠিকমত দোকানদারিও করতে। সেই সাথে মায়ের অসুস্থতাও বেড়েছে।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সালমা খাতুনকে সরকারের পক্ষ থেকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রতিবন্ধী ভাতা দেয়া হচ্ছে। নতুন করে তিনি কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তিনি আরো জানান, অনুদানের জন্য নিয়ম নেমে আবেদন করলে তার বিষয়টি দেখা হবে।
সালমা খাতুনের পিতা সোহরাব হোসেন মেয়ের চিকিৎসায় তার পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের উর্ধতনসহ সমাজের বিত্তবান ও মানবিক মানুষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।