কোটচাঁদপুর সংবাদদাতা
ইজারার সাড়ে চার বছর থাকতেই বাঁওড় ফেরতে দাবিতে কোটচাঁদপুরে মানববন্ধন করেছেন ঝিনাইদহ-যশোর বাঁওড় মৎস্যজীবী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। রোববার দুপুর ১২টার দিকে বলুহর বাঁওড়ের সিঙ্গিয়া অংশে এ মানববন্ধন করেন তারা।
এদিকে বাঁওড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে দখলের পায়তারা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী ইজারাদাররা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বৃহত্তর যশোর অঞ্চলে ছয়টি বাঁওড় আছে। যার মধ্যে রয়েছে বলুহর, জয়দিয়া, কাঠগড়া, ফতেপুর, মর্জাদ ও বেড়গোবিন্দপুর। এ সব বাঁওড়ের মধ্যে কোটচাঁদপুর উপজেলায় বড় দুইটি বাঁওড়ের একটি বলুহর ও অন্যটি জয়দিয়া বাঁওড়। বাঁওড়গুলো দীর্ঘদিন সরকারিভাবে চাষ করে আসছিল বাঁওড় পাড়ের মৎস্যজীবীরা।
তবে প্রতি বছর এ সব বাওড়ে সরকারের লোকসান হত। এ কারণে ২০২২ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় বাঁওড়গুলোকে মৎস্য অধিদপ্তর থেকে নিয়ে দরপত্রের মাধ্যমে ইজারার ব্যবস্থা করেন।
সে সময় মৎস্যজীবীরা একের পর এক আন্দোলন করেন ইজারা বাতিল করে বাঁওড় ফেরতের দাবিতে। কিন্তু তাতে কোন ফল হয়নি। পরে ওই বাঁওড়গুলো স্থানীয় ভূমি অফিস ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা ইজারা প্রাপ্তদের বাঁওড়গুলো বুঝিয়ে দেন। সে থেকে তারা বাওড়ে চাষ আসছেন।
গত ৫ আগস্ট সরকার বদলের পর থেকে তারা আবারও আন্দোলনের প্রস্তুতি চালাচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে ঝিনাইদহ-যশোর মৎস্যজীবী আন্দোলনের ব্যানারে কোটচাঁদপুরের বলুহর বাঁওড়ের সিঙ্গিয়া অংশে মানববন্ধন করেন তারা।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, জয়দিয়া বাওড়ের সভাপতি নিত্য হালদার,বলুহর বাওড়ের সাধারন সম্পাদক নির্মল হালদার। তিনি বলেন,গত এক বছর আমরা বাঁওড় হারিয়েছি। সে থেকে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।
এ ব্যাপারে আদালতে মামলাও চলমান। তবে বিগত সরকারের আমলে তারা গায়ের জোরে বাঁওড় দখল নিয়ে মাছ ছাড়া ও আহরন করে আসছেন।
তিনি বলেন, গত ৫ তারিখে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন বৈষম্য বিরোধী সরকার। এ কারনে এ সরকারের কাছে আমরা আমাদের দাবির কথা জানাব। এর অংশ হিসেবে আজ এ মানববন্ধন করা।
বিষয়টি নিয়ে বলুহর বাওড়ের ইজারাদার শীতল মন্ডল বলেন, অন্যের প্ররোচনায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বাঁওড় দখলের পায়তারা চালাচ্ছেন তারা।
শীতল মন্ডল বলেন, বাঁওড়ের ইজারার মেয়াদ এখনও সাড়ে চার বছর বাকি রয়েছে। এর মধ্যে তারা আবারও এ ধরনের কর্মকাণ্ড লিপ্ত হচ্ছেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।
জয়দিয়া বাঁওড়ের ষষ্ঠী হালদার বলেন, তারা এর আগে অনেক কিছুই করেছেন। কোন লাভ হয়নি। এখন আবার নতুন করে পায়তারা চালাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উছেন মে বলেন, মানববন্ধন করার বিষয়টি আমার জানা নাই। তবে এখন সবাই স্বাধীন আন্দোলন করতেই পারেন। তিনি বলেন, যেহেতু বাঁওড় ইজারাদারদের দখলে রয়েছে, সেহেতু ওনারা বিষয়টি নিয়ে জেলায় কথা বলতে পারেন।