বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডের বারান্দায় দোয়াত হোসেন পটল (৫৫) নামে এক ব্যক্তি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অজ্ঞাত পরিচয়ে ১০দিন চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হয়ে নিজের নাম, পরিচয় বলতে পারছেন। কিন্তু স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। ফলে অবহেলায় চলছে তার চিকিৎসা। তাকে স্বজনদের কাছে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত অবস্থায় কে বা কারা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে রেখে যায়। আহত দোয়াত হোসেন পটল কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে আছে। ছেলেদের নাম মঞ্জুর ও শিশির নাসিম। তার একটা হাত নেই।
বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, বেড ও বিছানা ছাড়া একজন রোগী মেঝেতে শুয়ে আছেন। পাশে পড়ে আছে ব্যবহৃত স্যালাইন ও প্রসাবের ব্যাগ। মাথার পাশে ছেড়া স্যান্ডেল ও খালি পানির বোতল। একজন মহিলা তাকে মুখে তুলে খাবার খাওয়াচ্ছেন। দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালের বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছে। তার মেলেনি বেড। এমনকি বিছানার চাদর বা বিছানা। হাতের ক্ষত নিয়মিত ড্রেসিং হচ্ছে না তার। ডাক্তার ঠিকমত চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন না। স্বজন না থাকায় অবহেলায় পড়ে আছেন সার্জারি ওয়ার্ডের বারান্দার পশ্চিম কোণে। ওয়ার্ডে আগত অন্য রোগীর স্বজনরা মাঝে মধ্যে খাবার মুখে তুলে দিচ্ছেন তার।
শহরের রায়পাড়া এলাকার বিলকিস খাতুন বলেন, তার আত্মীয় হাসপাতালে ভর্তি থাকাতে ৫ দিন নিয়মিত হাসপাতালে আসছেন তিনি। হাসপাতালে এসে ওই লোকটাকে এমন পড়ে থাকতে দেখেন। তার কোনো স্বজন এখানে না থাকাতে তার ঠিকমত চিকিৎসা হচ্ছে না। তিনি অসুস্থ লোকটাকে নিয়মিত খাবার খাইয়ে রেখে যান। এখন সে তার নাম, পরিচয় বলতে পারছে। তার পরিবারের লোকজনের সন্ধান পেলে হয়ত লোকটা দ্রুত সুস্থ হতে পারত।
হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অজ্ঞাত পরিচয়ে লোকটাকে ভর্তি করা হয়। তার ওষুধ চলছে। আগের চেয়ে স্বাভাবিক হয়েছে। যতটুকু মনে হয়েছে তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। তার বিছানা করে দিলেও তা নষ্ট করে ফেলে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাশেদ খান বলেন, অজ্ঞাত পরিচয়ে চিকিৎসাধীন ব্যক্তির পরিচয় পেয়েছি। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায়। তাকে বাড়ি পৌঁছানোর ব্যাপারে আস্থা ফাউন্ডেশন নামে একটা সংগঠনের সাথে কথা হয়েছে। তারা লোকটিকে স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেবে।