আব্দুল ওয়াহাব মুকুল
শরতের কাশফুল আর নীল আকাশে শুভ্রতা জানান দিচ্ছে অশুভ শক্তির বিনাশে দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা স্বর্গ থেকে মর্তলোকে আসছেন। মনোমুগ্ধকর আলোকসজ্জা, উৎসবের রঙে ও বর্ণিল সাজে মন্ডপে মন্ডপে সকল প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। পাঁচ দিনব্যাপি পূজায় দেবী দুর্গার অধিবাস, আহবান ও বোধনের মধ্য দিয়ে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে পুজার মূল কাজ।
চারিদিকে বাজবে ঢাকের ঢেং কুরকুর আওয়াজ। শাঁখ বাজিয়ে মেয়েরা দিবে উলুধ্বনি। পূজা মণ্ডপগুলোতে নামবে হাজারো মানুষের ঢল। সব ধর্ম বর্ণ মানুষের উপস্থিতিতে এ সময় মণ্ডপগুলো মিলন মেলায় পরিনত হবে। মন্দিরে মন্দিরে চলবে মায়ের ভক্ত সন্তানদের প্রার্থনা। মায়ের সন্তুষ্টি বিধানে সন্ধ্যায় নৃত্যগীত সহযোগে চলবে আরতি।
এই বছর দেবী দুর্গার আগমন দোলায়, যার ফল মড়ক এবং গমন ঘোটকে, যার ফল ছত্রভঙ্গ। ফলে এটি অশুভ ইঙ্গিত। ২০২৩ সালে দেবীর আগমন ও গমন দুটোই হয়েছিল ঘটকে। শাস্ত্রে বলা আছে, কোনও বছর দেবীর আগমন ও গমন একই বাহনে হলে তা অত্যন্ত অশুভ।
পূরান মতে, শান্তি, সংহতি, সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা ও দুষ্টের দমন আর সৃষ্টের পালনে বিশ্বব্যাপী মঙ্গল ধ্বনি নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মা দুর্গা দেবী এই পৃথিবীতে আসেন। আসুরিক শক্তির বিনাশ আর শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি লাভের জন্য সনাতনী সম্প্রদায় যুগ যুগ ধরে মা দুর্গার আরাধনা করে আসছেন। ভক্তরা দেবীর পদতলে ভক্তি আর পুষ্পাঞ্জলি প্রদানের অমিয় মানসে আয়োজন করেন নানা অনুষ্ঠান। বুধবার মহালায়তে পিতৃপক্ষের অবসানের মধ্যে দিয়ে দুর্গা উৎসব শুরু হবে। দেবের ষষ্টাদী কল্পারম্ভ। সন্ধ্যায় দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস। এ সময় ঢাকঢোল কাসার ঘন্টা আর শঙ্খ উলু ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠবে পুজা মন্ডপ গুলো।
১০ অক্টোবর মহা সপ্তমী পুজা, ১১ অক্টোবর মহা অষ্টমী। অষ্টমী পুজার বিশেষ আকর্ষণ কুমারী পুজা, ১২ অক্টোবর মহানবমী আর ১৩ অক্টোবর মহা দশমী পুজা। পরিশেষে পুজা সমাপন, বিসর্জন এবং শান্তি ও জল গ্রহণের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপি দুর্গোৎসব।