স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ
ফুলগুলো ঝরে গেছে। ঝরা পাঁপড়ির মতো একটি ফুল যশোরের শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। আধো আধো কথা বলতে শেখা চেরি মনিও যেন নির্বাক দৃষ্টিতে বলছে, আল্লাহ তুমি আমার শহিদ ভাই-বোনগুলোকে জান্নাত নসিব করো।
বলছিলাম, যশোর সদর উপজেলার খড়কি এলাকার নুসাইবা তাসনিয়া চেরি মনির (০২) কথা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত বাচ্চাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যশোরের সাধারণ ছাত্র জনতা শহিদ মিনারে মোমবাতি প্রাজ্জ্বলন ও দোয়া করে।
সেখানে বাবা মুস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে চেরি মনিও এসেছে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শহিদদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে। সবাই যখন মোমবাতি হাতে নিরব বসেছিলেন, চেরি মনি তখন বাবাকে ডেকে দেখাচ্ছিল, “বাবা ও বাবা ওই দেখো আগুন।” শহিদ মিনারের পাদদেশে প্রজ্জ্বলিত মোমবাতি রাখার পর চেরিও এগিয়ে গিয়েছে। “আগুন আগুন” বলে চিৎকার করে বাবাকে জড়িয়ে ধরেছে।
বাবা মুস্তাফিজুরের অভয়ে পরক্ষণে ছোট্ট বাচ্চাটি বুকে সাহস সঞ্চার করে মোমবাতির পাশে গিয়ে নীরব হয়ে বসেছে। মোমবাতির আগুন দেখতে দেখতে চেরি মনিও হয়তো অনুভব করেছে আগুনে পুড়ে, দগ্ধ হওয়া কোমলমতি বাচ্চাদের মৃত্যু যন্ত্রণা।
শহিদ মিনার এলাকার মুস্তাফিজুর রহমান জানান, মাইলস্টোনে আগুনে পুড়ে বাচ্চাগুলো মারা গেছে। এই কথা চিন্তা করলে গায়ের লোম খাড়া হয়ে যায়। আমিও আমার বাচ্চাদের ছুটির সময় বাড়ি নিয়ে আসি। আমি এমন ঘটনা কল্পনাও করতে পারছি না। সবার মতো আমিও বাচ্চাকে নিয়ে শহিদ মিনারে এসেছি। মোমবাতি জ্বালানোর পর দোয়া করলাম ছোট্ট সোনামণিদের জন্য।
এই বেদনাবিধূর ঘটনার স্মৃতিচারণ কি আমাদের আদৌ সচেতন করে তুলবে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়াতে?