ঝিকরগাছা সংবাদদাতা
যশোরের ঝিকরগাছায় প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে প্রশাসন ফেমাস মেডিকেল ক্লিনিককে সিলগালা করেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাভিদ সারওয়ারের নেতৃত্বে পৌরসদরের রাজাপটিতে এ অভিযান চালানো হয়। ক্লিনিকের প্রধান ফটক বন্ধ থাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নতুন করে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়। পরে ভবনটি মালিকের জিম্মায় রাখা হয়।
অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুর রশিদ, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর আব্দুল মতিন ও থানার এসআই কামাল হোসেন প্রমুখ।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার উপজেলার নির্বাসখোলা ইউনিয়নের শিওরদাহ গ্রামের ইয়ানুর রহমানের মেয়ে সোহানা খাতুন (১৯) ফেমাস ক্লিনিকে সিজার অপারেশনের সময় মারা যান। অপারেশনটি পরিচালনা করেন বিতর্কিত ভুয়া ডাক্তার শরীফ উদ্দীন। সিজারের মাধ্যমে দুটি কন্যাশিশুর জন্ম হলেও একপর্যায়ে প্রসূতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
এ প্রসঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাভিদ সারওয়ার বলেন, প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতেই অভিযান চালিয়ে ফেমাস মেডিকেল তালাবদ্ধ করা হয়েছে। তবে মৃতের পরিবার এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেনি বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, ঘটনার মূল হোতা আন্ডার মেট্রিক হাতুড়ে ডাক্তার শরীফ উদ্দীনের সালেহা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সচেতন মহল শরীফের ক্লিনিক সিলগালা, লাইসেন্স বাতিল এবং তাকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী সোহানার বাবা ইয়ানুর রহমান বলেন, আমরা গরিব মানুষ। মেয়েকে বাঁচাতে যা বলা হয়েছে তাই করেছি। কিন্তু যারা ডাক্তার পরিচয়ে প্রতারণা করে আমার মেয়েকে মেরেছে, তাদের বিচার চাই। আমার নাতনিরা মায়ের মুখ দেখতে পেল না-এটাই সবচেয়ে বড় কষ্ট।