জীবননগর সংবাদদাতা
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামে পূর্ব শত্রুতা ও রাজনৈতিক কোন্দলের জেরে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আপন দুই ভাই নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন অপর এক ভাই।
নিহতরা হলেন উথলী গ্রামের বড় মসজিদ পাড়ার বাসিন্দা মিন্টা মিয়া (৬০) ও তার ছোট ভাই হামজা আলী (৪৫)। গুরুতর আহত আরেক ভাই রাজ্জাক।
জানা গেছে, শনিবার সকাল আনুমানিক ৭টার দিকে তিন ভাই মিন্টা, হামজা ও রাজ্জাক গ্রামের ৭২ নং ব্রীজের কাছে ওরসের মাঠে কৃষি কাজ করছিলেন। এ সময় পূর্ব শত্রুতার জের একই গ্রামের খোকা (৫০), খোকার পুত্র জুয়েল (৩৫) ও হিমেল (২৫), ইশা (৫৫), স্বপনসহ সংঘবদ্ধ দল তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র, দা এবং হাসুয়া, দিয়ে তিন ভাইকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে।
পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর অবস্থায় আনোয়ার হোসেন মিন্টা ও হামজাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাদের মৃত্যু হয়। আহত রাজ্জাককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জীবননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতদের স্বজনরা জানান, দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। প্রায় পাঁচ মাস আগে গরু কেনাবেচা নিয়ে তাদের মধ্যে একটি বিবাদ শুরু হয়। এই বিরোধ মীমাংসার জন্য স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হলেও কোনো সমাধান হয়নি। পরে দুই পক্ষই জীবননগর থানায় একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা করে যা এখনো চলমান।
নিহতদের স্বজন রমজান জানান, বিরোধের জেরে কয়েক মাস আগে একই হামলাকারীরা মিন্টা ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। তখন তারা যশোর থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরেছিলেন। কিন্তু আজকের এই হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। নিহতদের দুলাভাই ইসলামের দাবি তার তিন শ্যালকের ওপর হামলাকারীরা হলেন স্থানীয় নিজাম, বিপুল, স্বপন, তুতা, জুয়েল, হিমেল, সাইফুলসহ তাদের দলবল।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের হাসপাতালের চিকিৎসক ওয়াহিদ আহমেদ রবিন জানান, সকাল ১০টার দিকে হাসপাতালে আনার পর তারা হামজাকে মৃত অবস্থায় পান। মিন্টাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হলেও, ১০টা ৫০ মিনিটে তারও মৃত্যু হয়।
এদিকে খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মাওলা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন হোসেন বিশ্বাস জানিয়েছেন, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তিনি বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’ এই ঘটনার পর থেকে উথলী গ্রামে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।