মিরোনুর বাপ্পী, চৌগাছা
চৌগাছার স্বরুপদাহ গ্রামের চাষী কামারুল ইসলাম আধুনিক যন্ত্রপাতির যুগে এসেও হাল চাষের জন্য ব্যবহার করছেন ঘোড়া। গরু ও মহিষ দিয়ে হাল চাষ প্রায় বিলুপ্ত হলেও কামারুল ইসলাম ঘোড়ার মাধ্যমে এই পুরোনো চাষ পদ্ধতিকে ধরে রেখেছেন।
একসময় মাঠে মাঠে গরু ও মহিষ দিয়ে হাল চাষের দৃশ্য ছিল নিয়মিত। কিন্তু আধুনিক যন্ত্রপাতির আগমনে এটি প্রায় অদৃশ্য হয়ে গেছে। বর্তমানে কৃষকরা ট্রাক্টর ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে জমি চাষ করেন। তবে কামারুল ইসলাম এখনো নিজের ঘোড়া দিয়ে হালচাষ পদ্ধতি ধরে রেখেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে কামারুল ইসলাম নিজ গ্রাম স্বরুপদাহসহ আসে পাশের গ্রাম গুলোতে এই ঘোড়ার মাধ্যমে জমি চাষ করে করে চলেছেন।
চাষী কামরুল ইসলাম বলেন, চৌগাছাতে আমিই একমাত্র ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করি। আগে গরু দিয়ে চাষ করলেও গত পাঁচ বছর ধরে ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ করছি। কারণ গরুর থেকেও ঘোড়া দ্রুত কাজ করে, এছাড়া একজোড়া হালের গরুর দাম তিন থেকে চার লাখ। সেখানে কয়েক হাজার টাকায় ঘোড়া পাওয়া যায়। কামরুল আরও বলেন আমি ছোট দুইটা ঘোড়া কিনে নিজেই ঘোড়া দুটির নাংলা করি (চাষ উপযোগী)।
ঘোড়ার হালচাষের সুবিধা বিষয়ে তিনি বলেন, ঘোড়া দ্রুত কাজ করে। আমি এইমাত্র ত্রিশ বিঘা জমি বাঁশই (মই দিয়ে চাষ) দিয়ে আসলাম। গরুর থেকে ঘোড়ার দাম কম। ঘোড়া খাবার খরচও কম।
ঘোড়ার হালচাষে আয়-রোজগার বিষয়ে কামরুল বলেন, গত সিজনে এই ঘোড়ার বাঁশই (মই) দিয়ে চাল কিনে খেয়ে সংসার খরচ বাদে পঞ্চাশ হাজার টাকা মজুদ আছে।
এই করেই আমি গত পাঁচবছরে ছাদের বাড়ি দিচ্ছি। জমি নিছি। প্রতি সপ্তাহে একুশশ’ টাকা কিস্তি টানি এর উপর থেকে।
আমার মোট চারটা ঘোড়া ছিল গত বছর একটা ঘোড়া স্ট্রোক করে মারা গেছে, এখন তিনটে আছে।
তার প্রতিবেশি আদম বলেন , আমার জমি ও চাষ করি এই ঘোড়া দিয়ে , এই করে ভালই দেড়ি মজুদ করেছে কামারুল।
ইউপি সদস্য ফখরুল ইসলাম বলেন, শুধু হাল চাষ না, ধান টানা, পাট টানা কাজ ও ঘোড়া দিয়েই করে। মোট কথা ঘোড়া দিয়েই সব করে, এই করেই পরিবারটি এখন ভাল স্বচ্ছল।