বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের ভৈরব নদে ‘অপরিকল্পিত খনন ও বালু উত্তোলনে’ ভাঙ্গনকবলিত পরিবারগুলো ভিটেমাটিটুকু রক্ষার আকুতি জানিয়েছে। যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জীর কাছে তারা এই আকুতি জানিয়ে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার নদের পাড় বাঁধার অনুরোধ জানান।
অপরিকল্পিত খনন ও ভৈরব নদ থেকে বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত যশোর শহরের বাবলাতলা, ঘোষপাড়া, রায়পাড়ার বাসিন্দারা সোমবার সকালে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জীর সাথে সাক্ষাত করেন। এ সময় মতবিনিময়কালে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী বলেন, চার বছর আগে ভৈরব নদ খননের সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তির যোগসাজশে একটি চক্র ডেজ্রার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে। এর ফলে ভৈরব নদের তীরের পুরাতন কসবা ঘোষপাড়া ও রায়পাড়া, বাবলাতলা সেতুর উত্তর ও দক্ষিণ পাশে অন্তত দুই কিলোমিটার এলাকায় ভূমি ধসে গেছে। আধা পাকা ও পাকা বাড়িঘর, পৌরসভার পয়োনিস্কাশন নালা, খালি জমি, সীমানা প্রাচীরসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙে গেছে অসংখ্য বাড়িঘর নদের মধ্যে ভেঙে পড়েছে। এখন যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে নদের পাড় বাঁধা না হয় তাহলে আগামী বর্ষায় ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য এলাকাবাসী দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নদের পাড় বাঁধার জন্য অনুরোধ জানান। ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে কথা বলেন, ঘোষপাড়া এলাকার মোছা. কুলছুম, মুক্তি খাতুন, আবুল হোসেন, বাবলাতলার আলিফ হোসেন, তন্নি খাতুন প্রমুখ।
এ সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী ক্ষতিগ্রস্তদের বলেন, ধারাবাহিকভাবে নদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পাড় বাঁধার কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে পুরো এলাকায় নদের পাড়ে বাঁধ দেওয়া হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছে বলেও তিনি আশ্বস্ত করেন।
মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন, সামাজিক সংগঠন জনউদ্যোগ যশোরের আহ্বায়ক প্রকৌশলী নাজির আহমদ, সদস্য লেখক ও সাংবাদিক হাবিবুর রহমান মিলন, প্রাইডের নির্বাহী পরিচালক উজ্জ্বল কুমার বালা, আইইডি যশোর কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক বীথিকা সরকার, সদস্য সচিব কিশোর কুমার কাজল প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, যশোর শহরের ভৈরব নদ থেকে অপরিকল্পিত খনন ও বালু উত্তোলনের ফলে পাড়ের দু’কিলোমিটারের মধ্যে ভয়াবহ নদী ধসে অন্তত ৮০টি পরিবারের বাড়িঘর ভেঙ্গে গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগে, ভৈরব খননের প্রকল্প চলাকালে প্রভাবশালী একটি মহল একাধিক ড্রেজিং মেশিন দিয়ে কয়েক বছর ধরে বালু উত্তোলন করে তাদের এমন বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দিয়েছে। জমি-বাড়ি ধসে এই পরিবারগুলোর অন্তত আট কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।